বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ার্কার্স পার্টি ছাড়লেন বিমল বিশ্বাস

নতুনধারা
  ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
বিমল বিশ্বাস

যাযাদি রিপোর্ট

ক্যাসিনোকান্ডের পর নির্বাচন নিয়ে এক বক্তব্যের জন্য চাপে থাকা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবার ধাক্কা খেলেন নিজের দলের মধ্যে।

ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আদর্শচু্যতির অভিযোগ তুলে দল ছেড়েছেন পলিটবু্যরোর সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস।

মঙ্গলবার ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ৭৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।

যশোরে অবস্থানরত বিমল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ওয়ার্কার্স পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ই-মেইলে আবেদন জানিয়েছেন তিনি, এরপর সভাপতি মেননের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন।

দলটি ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমি মনে করি, ওয়ার্কার্স পার্টি মার্কস-লেনিনের আদর্শের কথা বললেও বাস্তবে তার নীতি-কৌশল-সংগঠন এবং তাদের কর্মকান্ডে তার প্রতিফলন নেই। পার্টির নেতাদের আদর্শগত-রাজনৈতিক-সাংগঠনিক বিচু্যতির কারণে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ প্রত্যাহার করেছি।"

এমন এক সময় দল ছাড়লেন বিমল বিশ্বাস, যখন ওয়ার্কার্স পার্টি তাদের কংগ্রেসের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিমল বিশ্বাস বলেন, "গঠনতান্ত্রিকভাবে

দলের মেম্বারশিপ প্রত্যাহার আমার

\হডেমোক্রেটিক রাইট। দলের কোনো সিদ্ধান্ত আর আমার জন্য প্রযোজ্য নয়। সামনে ২ নভেম্বর কংগ্রেস শুরু হবে। এর অন্তত ১৫ দিন আগে প্রত্যাহারপত্রটি পাঠালাম।"

১৯৪৬ সালের ১২ জুলাই জন্ম নেওয়া বিমল বিশ্বাস ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনের সময় বাম রাজনীতিতে যুক্ত হন। রুশ-চীন দ্বন্দ্বে সারাবিশ্বে কমিউনিস্ট পার্টির বিভাজনের পর তিনি ছিলেন চীনপন্থি শিবিরে।

নানা দল হয়ে ১৯৯২ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি গঠিত হলে সেই অমল সেন ও রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে গঠিত ওয়ার্কার্স পার্টিতে যুক্ত হন বিমল বিশ্বাস।

তিনি বলেন, "আমি বিপস্নবী কমিউনিস্ট পার্টিসহ তিন দলের ঐক্য, পরে চার দলের ঐক্য, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগসহ ৫ দলের ঐক্য- যত টুকরো হয়েছিল সেগুলোকে ইউনাইটেড করতে করতে ১৯৯২ সালে মেনন ভাইদের সঙ্গে এক পার্টি হলাম। আমাদের যে খন্ডবিখন্ড শক্তি, তাতে ঐক্যবদ্ধ হলাম ১৯৯২ সালের ৪ মে।"

চীনপন্থি দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনের পর প্রথমে পলিটবু্যরো সদস্য ছিলেন বিমল বিশ্বাস' পরে সভাপতি মেননের সঙ্গে ১০ বছর ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ কংগ্রেসে তার জায়গায় আসেন ফজলে হোসেন বাদশা।

গঠনের পর ওয়ার্কার্স পার্টি প্রথমে সিপিবি নেতৃত্বাধীন বাম ফ্রন্টে ছিল। পরে ১১ দল গঠন হলে সেই জোটেও ছিল দলটি। কিন্তু দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগকে নিয়ে গঠিত ১৪ দলে ওয়ার্কার্স পার্টি যোগ দিলে সিপিবি, বাসদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ছেদ ঘটে।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট গঠনের পর দুই দফা ভাঙনের মুখে পড়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। একটি অংশ সাইফুল হকের নেতৃত্বে বিপস্নবী ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন করে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে। আরেকটি অংশের কিছু নেতা যোগ দিয়েছেন সিপিবিতে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিমল বিশ্বাস ২০০৮ সালের নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে ১৪ দলের প্রার্থী ছিলেন; কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ কবিরুল হক মুক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে হারিয়ে দেন তাকে। পরে আর কোনো নির্বাচনে জোটের মনোনয়ন পাননি তিনি।

এবার কংগ্রেসের আগে ওয়ার্কার্স পার্টিতে আরেক দফা ভাঙনের গুঞ্জনের মধ্যে বিমল বিশ্বাস দল ছাড়লেন। তার কথায়ও ভাঙনের সুর পাওয়া গেছে।

বিমল বিশ্বাস বলেন, "সেজন্যই বলছি, আদর্শিক রাজনীতি বাদ দিয়েছে, শুধু এ ঘটনার জন্য প্রত্যাহার করলাম তা নয়; সব বিষয় নিয়ে। ওয়ার্কার্স পার্টির ভাঙনের কথাও গণমাধ্যমে আসছে। এটা যদি মেইন ব্যাপার হয়, তাহলে তো আদর্শের রাজনীতির দরকার নেই।"

"আমার সোজা কথা, যে রাজনীতি উনারা করেছেন, সমস্ত ঘটনার প্রতিফলনের অংশ বিশেষ (আমার পদত্যাগ)। আদর্শিক রাজনৈতিক সাংগঠনিক সমস্ত ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে মৌলিক যে তফাৎ, সে তফাতের কারণেই আমি অব্যাহতিপত্র পাঠিয়েছি।"

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<72375 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1