বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেরাই আইন ভাঙছেন পরিবহণ শ্রমিকরা

নতুনধারা
  ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক

বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় পরিবহণ শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য আকস্মিকভাবে কাজ বন্ধ করে দেয়। কখনো তারা ধর্মঘটের ডাক দেয়, আবার কখনো ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সেটিকে 'কর্মবিরতি' হিসেবে বর্ণনা করে।

নতুন পরিবহণ আইন সংস্কারের দাবিতে গত দুই দিন ধরে পরিবহণ শ্রমিকরা যা করছে সেটিকে তারা 'কর্মবিরতি' হিসেবে বর্ণনা করছেন।

শ্রম আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 'কর্মবিরতি' শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবহণ শ্রমিকরা দেখাতে চাইছেন যে বিষয়টিতে সংগঠনের কোনো দায় নেই। এটা শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করছে বলে তারা দেখাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উত্তম কুমার দাশ বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী 'ধর্মঘটের' বিষয়টি মালিকপক্ষ এবং শ্রমিকপক্ষের বিষয়। কিন্তু পরিবহণ খাতে উভয়পক্ষের স্বার্থ এক হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখানে শ্রমিকদের দাবি সরকারের কাছে। সেজন্য তারা 'ধর্মঘটের' পরিবর্তে 'কর্মবিরতি' শব্দটি ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, 'আইন নিয়ে তাদের যদি কোনো ক্ষোভ থাকে, তাহলে বিষয়টি তারা আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই জনজীবন বিপর্যস্ত করে কর্মবিরতিতে যেতে পারে না।

তাছাড়া বাস-ট্রাক শ্রমিকরা যেভাবে বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন সেটি দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য বলে উলেস্নখ করেন বিশ্লেষকরা।

ধর্মঘট নিয়ে আইন কী বলছে?

কোনো শ্রমিক সংগঠন যদি ধর্মঘট পালন করতে চায়, তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই নিয়ম মেনে চলতে হয় শ্রমিক সংগঠনগুলোকে।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ধর্মঘট ডাকতে পারে স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন। তাদের যদি কোনো দাবি থাকে তাহলে বিষয়টি নিয়ে প্রথমে আলোচনা করতে হবে মালিকপক্ষের সাথে। মালিকপক্ষ বিষয়টি সুরাহা না করলে তখন তারা বিষয়টি নিয়ে যাবে শ্রম অধিদপ্তরে। সেখানে মালিক এবং শ্রমিক উভয়পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতার চেষ্টা করা হবে।

শ্রম অধিদপ্তরের মধ্যস্থতায় যদি মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ একমত না হয় তখন আইন অনুযায়ী দুটো রাস্তা খোলা থাকে।

আইনজীবী উত্তম কুমার দাশ বলেন, বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকপক্ষ তখন আদালতে যেতে পারে কিংবা তারা ধর্মঘট পালন করতে পারে। কিন্তু চাইলেই তারা আকস্মিকভাবে ধর্মঘটে যেতে পারে না।

তিনি বলেন, 'ধর্মঘট পালন করতে হলে শ্রমিক সংগঠনকে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের মতামত নিতে হবে। দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক যদি ধর্মঘটের ডাক দেয় তাহলে আইন অনুযায়ী ৭ থেকে ১৪ দিনের নোটিশ দিয়ে ধর্মঘট পালন করতে পারে।'

এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে তিনি উলেস্নখ করেন।

তবে শ্রমিকরা বলছেন, তারা কোনো বেআইনি কাজ করছেন না।

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম বলেন, চলমান কর্মবিরতিতে দেশের কোনো আইন ভঙ্গ হয়নি।

তিনি বলেন, 'মালিকরা গাড়ি দিচ্ছে না, শ্রমিকরাও কাজে যাচ্ছে না। এখানে আগে থেকে নোটিশ দেবার কিছু নেই।'

তিনি দাবি করেন, দেশের কোথাও পরিবহণ শ্রমিকরা যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না। বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<76460 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1