বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াতে সেক্রেটারি জেনারেল পদ নিয়ে টানাপোড়েন

নতুনধারা
  ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

'আমির' নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর এবার সেক্রেটারি জেনারেল পদে মনোনয়ন নিয়েও টানাপোড়েন চলছে জামায়াতে ইসলামীতে। এরই মধ্যে সেক্রেটারি জেনারেল পদে মনোনয়ন ঘিরে একাধিক পক্ষের সৃষ্টি হয়েছে। সেক্রেটারি জেনারেল পদে মনোনয়ন ঘিরে নতুন আমির শফিকুর রহমানের ওপর এই পক্ষগুলো অসন্তুষ্ট। তিনি দলে নিজস্ব প্রভাব-বলয়ের সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শফিকুর রহমান সম্প্রতি জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন। এখনো তার শপথ হয়নি। দলটির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আমিরের পর জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার নির্বাচন শেষ হয়েছে। শিগগির মজলিশে শূরার অধিবেশন ডাকা হবে অথবা, নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে নতুন আমির শপথ নেবেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জামায়াতের আমির সেক্রেটারি জেনারেল পদে মনোনয়ন দেন। আমির পদে শপথের পর তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্য থেকে একজনকে সেক্রেটারি মনোনীত করবেন। তা নিয়েই দলে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

জামায়াতের সূত্র জানায়, শফিকুর রহমান আমির নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলের সেক্রেটারি জেনারেল পদ নিয়ে সম্ভাব্যদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। কারণ নতুন আমির দলে নিজস্ব প্রভাব-বলয়ের সৃষ্টি করছেন বলে তাদের অভিযোগ। যদিও জামায়াতে নেতৃত্বের জন্য কারও প্রার্থী হওয়ার প্রথা নেই এবং তা গঠনতান্ত্রিকভাবে নিষিদ্ধ। এরপরও ঐতিহ্য ভেঙে এই প্রথম দলের সম্ভাব্য সেক্রেটারি জেনারেল কে হচ্ছেন, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে টানাপড়েনের সৃষ্টি করেছে। যার প্রভাব পড়েছে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। আর তার প্রকাশ ঘটছে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে।

কথা বলে জানা গেছে, সেক্রেটারি পদে এখন পর্যন্ত ছয়জন নেতার নাম আলোচিত হচ্ছে। তারা হলেন: কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির (সহসভাপতি) মিয়া গোলাম পরওয়ার, নির্বাহী পরিষদের সদস্য এ টি এম মাছুম, সৈয়দ আবদুলস্নাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি তাসনীম আলম।

নেতাকর্মীরা বলছেন, দলে জানাশোনা এবং জনপ্রিয়তার দিক থেকে সৈয়দ আবদুলস্নাহ মো. তাহের এগিয়ে। কিন্তু সংস্কারবাদী সন্দেহে তিনি দীর্ঘদিন থেকে দলে কোণঠাসা। তাহের ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। অন্যদের মধ্যে তাসনীম আলম শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং কর্মকান্ডে কম সক্রিয়। হামিদুর রহমানকে নিয়ে তার নিজ এলাকা কক্সবাজারে বিতর্ক আছে। হামিদুরের বিরুদ্ধে তার এক ব্যবসায়িক অংশীদার জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেন। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন।

এর বাইরে সেক্রেটারি জেনারেল পদে আলোচনার শীর্ষে আছেন গোলাম পরওয়ার, এ টি এম মাছুম ও রফিকুল ইসলাম খানের নাম। মাছুম এবার জামায়াতের আমির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। আমির পদে নির্বাচনের শুরু থেকে শফিকুর রহমানের প্রভাব বিস্তার নিয়ে নেতাকর্মীর মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালনকারী নেতাকে সেক্রেটারি করা সমালোচনা হতে পারে বলে মনে করছেন নেতাকর্মী অনেকে। মাছুমের মালয়েশিয়া পড়ুয়া ছেলে তারিকুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের ব্যাপারে ফেসবুকে নেতিবাচক পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ছেলেকে নিয়ে তিনি 'বিব্রত' অবস্থায় আছেন।

জানা গেছে, সেক্রেটারি পদে বেশি আলোচিত রফিকুল ইসলাম খান। কিন্তু তার সঙ্গে নতুন আমির শফিকুর রহমানের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। বিষয়টি এখন দলের দায়িত্বশীল পর্যায়ে অনেকটা প্রকাশ্য। রফিকুল ইসলাম দলের প্রভাবশালীদের একজন। একসময় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। পরে জামায়াতের ঢাকা মহানগর আমির হন। নিজামী-মুজাহিদদের গ্রেপ্তারের পর একসময় ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারির দায়িত্বও পালন করেন। এ সময় তিনি প্রভাব খাটিয়ে পছন্দের কয়েকজনকে নির্বাহী পরিষদের সদস্য করাসহ অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

দলীয় সূত্র জানায়, নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সেক্রেটারি করা হতে পারে। তিনি এবার তিন সদস্যের আমিরের প্যানেলেও ছিলেন। তবে নেতাকর্মীদের অনেকে বলছেন, নায়েবে আমির পদে থাকা পরওয়ারকে সেক্রেটারি করা হলে তা হবে ঐতিহ্যের খেলাপ এবং পদাবনতি। সে ক্ষেত্রে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদের নেতাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

অবশ্য মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, তাকে সেক্রেটারি জেনারেল করা হচ্ছে এমন কথা তিনি শোনেননি। এটা অসত্য। তিনি শ্লেষ প্রকাশ করে বলেন, 'জামায়াতকে নিয়ে কত কথাই তো লেখা হয়। আমাদের কিছু ভাই আছেন, তারাও বলেন। সাংবাদিকরাও অনেক কথা লেখেন, তারা লিখে আরাম পায়, এনজয় করে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78245 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1