শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পলাতক ৪ খুনির অবস্থান ৯ বছরেও শনাক্ত হয়নি

যাযাদি রিপোটর্
  ১৫ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যায় মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত পলাতক ছয় আসামির মধ্যে চারজনের অবস্থান নয় বছরেও শনাক্ত হয়নি।

বাকি দুজনের অবস্থান বিদেশে শনাক্ত হলেও তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দÐ কাযর্কর করার ক্ষেত্রে চলমান আলোচনায় এখনো কোনো সুফল আসেনি।

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবাষির্কীতে আজ জাতীয় শোক দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর একদল

কমর্কতার্ ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে।

দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

এই হত্যাকাÐে মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পঁাচজনের ফঁাসি কাযর্কর হয়েছে ২০১০ সালে। বাকিদের একজন মারা গেছেন এবং ছয়জন পলাতক আছেন।

এরা হলেন- আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা আছে।

এদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় এবং এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বলে নিশ্চিত রয়েছে ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।

বাকিরা কোথায় আছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা না থাকলেও সম্ভাব্য যে সব দেশে তাদের অবস্থানের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর সঙ্গে এনসিবি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে কাজ করছে বলে এনসিবির সহকারী মহাপুলিশ পরিদশর্ক মহিউল ইসলাম জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও এম রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান নিশ্চিত হলেও তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এ মুহূতের্ নতুন কোনো তথ্য নেই।

মহিউল বলেন, ‘কিছুদিন আগে শোনা গিয়েছিল, রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় গেছে। কানাডার কাছে জানতে চাওয়া হলে তাদের দেশে রাশেদ নেই বলে জানিয়ে দেয়। এ কারণে আমরা নিশ্চিত যে রাশেদ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় যাননি।’

ওই দুইজনকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে জোরালোভাবে যোগাযোগ চলছে।

এই পুলিশ কমর্কতার্ জানান, দÐিত বাকি চার আসামির মধ্যে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ভারতে রয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। আব্দুর রশিদ ও শরিফুল হক ডালিম কখনো পাকিস্তান কখনো লিবিয়ায় অবস্থান করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আব্দুল মাজেদ রয়েছে সেনেগালে।

এই চারজনের সবার অবস্থানই ‘সম্ভব্য’ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এসব দেশের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তাদের পক্ষ থেকে এখন পযর্ন্ত ‘ক্লিয়ার’ কিছু বলছে না জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আটির্লারি), বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (ল্যান্সার) ফঁাসি কাযর্কর হয় ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি। আজিজ পাশা ২০০১ সালের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়েতে মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। তারপর ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেয়া হয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে; মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি।

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দÐিত পঁাচজনের ফঁাসি কাযর্কর করা হয়।

খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানো হবে :আইনমন্ত্রী

এদিকে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ১৫ আগস্টের রাত বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক রাত। আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় এলে আমেরিকায় পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এ নিয়ে আমেরিকা সরকারের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা সদরের সিরাজুল হক মুক্তমঞ্চে আয়েজিত শোক সভা ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে এ শোক সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে কবে ফিরিয়ে আনা হবে সেটা নিয়ে সবার কৌতূহল। পোষা পাখি উড়ে যাওয়ার পর সেই পাখিকে যদি ফেরানো কষ্ট হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরানো কত কষ্টকর আপনারা বুঝেন। তবে আমেরিকায় থাকা রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর ব্যাপারে আমেরিকা সরকারের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।’

তিনি বলেন, আগামীতে ক্ষমতায় এলে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। আর কানাডায় থাকা নূর চৌধুরীকেও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে কানাডায় আইন আছে- যদি কোনো দেশে অন্যায়ের জন্য মৃত্যুদÐ সাজা থাকে তাহলে তাকে সে দেশে পাঠানো হয় না। তারা শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদÐ মানে না।

আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে শোক সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহŸায়ক সেলিম ভূইয়া, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহŸায়ক রাশেদুল কায়ছার প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<7996 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1