শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘আধুনিক’ ঢাকা গড়তে ৩৮ প্রতিশ্রুতি আতিকের

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম রোববার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন -যাযাদি

রাজধানী ঢাকাকে 'সুস্থ, সচল ও আধুনিক' নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত 'ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট', বায়ুদূষণ রোধে বিদু্যৎচালিত বাস নামানোসহ ৩৮টি প্রতিশ্রম্নতিতে নির্বাচনী ইশতেহার সাজিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়রপদপ্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম। রোববার গুলশানের লেকশোর হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, চিত্র তারকাসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের সামনে এ ইশতেহার তিনি তুলে ধরেন। আনিসুল হকের মৃতু্যর পর উপনির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র হওয়ার পর আট মাস সেই দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পেয়েছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিক। সে সময় শুরু করা কাজ 'এগিয়ে নিতে' আবারও উত্তরের ভোটারদের সুদৃষ্টি চাইছেন তিনি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। আওয়ামী লীগের আতিকসহ মেয়র পদের ছয় প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনকে তারা আগামী ১ ফেব্রম্নয়ারি বেছে নেবেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য। ২০১৯ সালের ফেব্রম্নয়ারির উপনির্বাচনে জিতে মেয়র হওয়ার পর সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা আতিককে করতে হয়েছে- তা হলো মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি বলেন, আবার নির্বাচিত হলে রাজধানীর মানুষকে মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে সারা বছর মশক নিধন কার্যক্রম চালাবেন তিনি। সে জন্য উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা ওয়াসা, পার্শ্ববর্তী সিটি করপোরেশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এ কাজ করতে চান তিনি। ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যে আধুনিক শহর গড়ার পথে একটি বড় বাধা সে কথা বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন বহু বছর ধরেই। আতিকুল ইসলামের ইসলামের হিসেবে ২০২১ সাল নাগাদ শুধু ঢাকা উত্তরের এলাকাতেই প্রতিদিন ৫ হাজার ২০০ টন বর্জ্য তৈরি হবে এবং ইনসিনারেশন (বর্জ্য পোড়ানো) ছাড়া এত বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়। টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রাজধানীর অদূরে আমিনবাজারে আরআরএফ (রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটিজ) স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানিতে রূপান্তরের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রম্নতি রয়েছে তার নির্বাচনী ইশতেহারে। বছর দুই ধরে উন্নয়ন কর্মকান্ডের ধুলার প্রভাবে ঢাকার বায়ুমান বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আতিক তার ইশতেহারে বলেছেন, বায়ুদূষণ রোধে ঢাকার রাস্তায় বিদু্যৎ চালিত বাস নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার। উত্তরের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক দক্ষিণের মেয়র এবং সরকারের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে মিলে গণপরিবহণে শৃঙ্খলা আনার কাজে জোর দিয়েছিলেন। আনিসুলের পর দায়িত্ব নিয়ে আতিকুল ইসলামও গণপরিবহণ খাতে ব্যবসায়িক নিয়ম, আর্থিক নিয়ম ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির কথা বলেছেন বিভিন্ন সময়ে। সেই সঙ্গে প্রধান সড়কগুলোতে রিকশা নিষিদ্ধ করার ওপর বরাবরই জোর দিয়ে আসছেন তিনি। আতিকের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে রাজধানীর গণপরিবহণ নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নির্মাণ, যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা, নিরাপদ পথচারী পারাপার নিশ্চিত করতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল পুশ বাটন সিগন্যাল স্থাপন, নগর পরিবহণ ব্যবস্থায় ডিজিটাল ই-টিকিটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা চালু, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা এবং গণপরিবহণ নিশ্চিতকরণ, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পার্কিং ব্যবস্থা নির্মাণ এবং নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্থানে স্বয়ংক্রিয় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের কথা রয়েছে এর মধ্যে। ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাওয়া ঢাকার খালগুলো মশার আবাসস্থল হয়ে ওঠার পাশাপাশি বর্ষায় জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। গত বছর মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি খাল উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছিলেন আতিক। আবারও মেয়রের চেয়ারে বসার সুযোগ পেলে রাজধানীর জলাশয় অবৈধ দখলমুক্ত করার প্রতিশ্রম্নতি রয়েছে তার। আতিকুল ইসলাম বলছেন, নির্বাচিত হলে মিরপুরে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষা প্রাণীর ক্লিনিক, আধুনিক জবাইখানা, রাজধানীবাসীর জন্য পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করবেন তিনি। এছাড়া পাড়া উৎসব উদযাপন, বস্তিবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা, ঢাকা দক্ষিণ সিটির বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, প্রতিটি স্থাপনায় ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ নির্মাণের কথা রয়েছে নৌকার প্রার্থীর ইশতেহারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে