ফুল শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও পবিত্রতার প্রতীক। এমনকি শোকের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে ফুল। তাই যে কোনো উৎসবে ফুলের দোকানগুলোতে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে সরগরম হয়ে উঠেছে ফুলের বাজার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানী, ধানমন্ডি ও শাহবাগের বিভিন্ন ফুলের দোকানে ক্রেতাদের আগমনে জমে উঠেছে বেচাকেনা।
সরেজমিন দেখা যায়, বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বছরের অন্য সময়ের তুলনায় সব ধরনের ফুলের দাম কয়েকগুণ বেশি। দাম বেশি হলেও বসন্ত বরণের উৎসব এবং ভালোবাসার কাছে যে বাড়তি দাম কোনো বিষয়ই নয়, তারই প্রমাণ মেলে এ ভিড়ে।
অন্যদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে ফুলের দামের ভিন্নতাও দেখা গেছে। ধানমন্ডিতে যে দেশি গোলাপ ৩০ টাকা, সেটি শাহবাগে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। ধানমন্ডিতে চায়না গোলাপ (দেশে উৎপাদিত) ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা শাহবাগে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য ফুলের ক্ষেত্রেও দামের পার্থক্য রয়েছে।
শাহবাগের ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপের মো. জলিল ফুলের বেচাকেনা প্রসঙ্গে বলেন, বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। এবার ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব একই দিনে এবং ছুটির দিন পড়েছে, তাই বিকাল থেকে বেচাকেনা আরও বাড়বে আশা করা যাচ্ছে।
শাহবাগের অন্য ফুলের দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফুলের চাহিদা যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। ফুলের বেচাকেনাও জমে উঠেছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেচাকেনা আরও বাড়বে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরাফ এবং কনক ফারজানা শাহবাগে এসেছেন ফুল কিনতে। ফুল কেনার পর এ দুই শিক্ষার্থী জানান, বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস এবং শুক্রবার বইমেলা উপলক্ষে প্রচন্ড ভিড় হবে, তাই একদিন আগেই ফুল কিনছেন তারা।
মানিক নামের এক ক্রেতা বলেন, 'ভালোবাসা দিবস ও বাড়িতে বিয়ে উপলক্ষে ফুল কিনতে এসেছিলাম। আগে ফুলের যে দাম ছিল, তার চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দাম চাচ্ছেন দোকানদাররা। সেজন্য একটু হিমশিম খাচ্ছি, ফুল কীভাবে কিনব। কারণ, যে বাজেট ছিল, তাতে কুলাচ্ছে না। তারপরও কিছু করার নেই। অল্প হলেও ফুল নিতে হবে।'
যাত্রাবাড়ীতে ফুলের দোকান রয়েছে মোহাম্মদ দীন ইসলামের। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি শাহবাগের আড়তে ফুল কিনতে
আসেন। দীন ইসলাম বলেন, 'আগামীকাল বসন্তবরণ ও ভ্যালেন্টাইনস ডে। এদিন অনেক কিছুর প্রয়োজন হবে। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে ফুলের দাম অনেক বেশি। কোনো কোনো সময় ১০০টি লাল গোলাপ পাইকারিতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় পাওয়া যায়। এখন ১০০টি গোলাপ মানভেদে ৮০০, ১ হাজার, ১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগামীকাল পর্যন্ত এরকম চড়া দাম থাকবে। তারপর আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।'
ছোট এক টুকরিতে করে ফুলের মালা বানিয়ে তা বিক্রি করছিলেন জ্যোৎস্না নামের এক বৃদ্ধা। তিনি বলেন, 'ফুল বিক্রি বেশ ভালো। যার কাছ থেকে যেমন পাচ্ছি, তেমন দামে ফুল বিক্রি করছি।'
ফুলের দাম প্রসঙ্গে তারা বলেন, ভালোবাসা দিবসে ফুলের দাম প্রতিবছর বেশিই থাকে। বেশি দাম দিয়েই কিনতে হলো। কিছুই করার নেই উৎসব তো পালন করতেই হবে।