শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুশফিক-মুমিনুল ম্যাজিকে চালকের আসনে বাংলাদেশ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টের তৃতীয় দিন সোমবার মুশফিকুর রহিম ডাবল সেঞ্চুরি (২০৩*) ও মুমিনুল হক সেঞ্চুরি (১৩২) করেন। এ দুজনের ব্যাটেই তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা -ওয়েবসাইট

দিনশেষে প্রাপ্তির ঝুলিতে দেখা গেল তার প্রায় সবই। মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে এলো বড় ইনিংস। রেকর্ডময় ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরিতে মুশফিক নিজেকে তুলে নিলেন নতুন উচ্চতায়। দল গড়ল রেকর্ড রানের সৌধ। শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়েকে নাঈমের জোড়া ধাক্কা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ তৈরি করে ফেলেছে জয়ের পথ।

মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনে জিম্বাবুয়েকে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার ৬ উইকেটে ৫৬০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে তারা।

দেশের মাটিতে বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ ৫৫৬ ছিল ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ২০৩। বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে একাধিক ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি তার ছিল আগেই। রেকর্ডটি এবার সমৃদ্ধ করলেন আরও। তামিমকে ছাড়িয়ে দেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটিও করে নিলেন নিজের। মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩২ রান।

শেষ বিকালে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ে প্রথম ওভারেই নাঈম হাসানের স্পিনে হারিয়েছে ২ উইকেট। দিনশেষ করেছে তারা ২ উইকেটে ৯ রানে। ইনিংস পরাজয় এড়াতেই তাদের প্রয়োজন এখনো ২৮৬ রান।

মুমিনুল ও মুশফিকের জুটি আগের দিনই যথেষ্ট ভোগায় জিম্বাবুয়েকে। নতুন দিনেও এই দুজনকে থামানোর পথ পায়নি তারা। দুজনের ব্যাটে রান আসতে থাকে বানের জলের মতো। প্রথম সেশনেই ২৮ ওভারে আসে ১১১ রান!

মুমিনুল তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১৫৬ বলে। ৯টি টেস্ট সেঞ্চুরিতে ছুঁয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে তামিমের সেঞ্চুরির রেকর্ড।

মুশফিক লাঞ্চে গিয়েছিলেন

৯৯ রানে। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই পা রাখেন শতরানে। ১৮০ বলে ১৮ চারে আসে তার সেঞ্চুরি।

ব্যক্তিগত মাইলফলকের পাশাপাশি ধরা দেয় জুটির কীর্তিও। তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি জুটিতে দুজনে গড়েন বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড।

দুজনের ২২২ রানের জুটি ভাঙে মুমিনুলের বিদায়ে। বাঁহাতি স্পিনার আইনস্স্নে এনডিলোভুর দারুণ ফিরতি ক্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরেন ২৩৪ বলে ১৩২ রান করে।

মোহাম্মদ মিঠুন এরপর পারেননি নিজের ছাপ রাখার সুযোগ কাজে লাগাতে। তবে লিটন দাস ভুল করেননি। ঠান্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে তিনি সঙ্গ দেন মুশফিককে। গড়ে ওঠে আরেকটি শতরানের জুটি।

ফিফটির পরপর লিটন আউট হন রেজিস চাকাভার দারুণ ক্যাচে। জিম্বাবুয়ের কিপারের সেটি ছিল ইনিংসে পঞ্চম ডিসমিসাল।

তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে এরপর ডাবল সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান মুশফিক। ৩১৫ বল খেলে স্পর্শ করেন কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক।

তার ব্যাট তো কথা বলেছেই, ডাবল সেঞ্চুরির পর উদ্‌যাপনেও যেন বলতে চাইলেন অনেক কথা!

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের টেস্টেই বাংলাদেশের রেকর্ড ২১৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। এবার নিজেকে ছাড়ানোর সুযোগ পাননি তিনি। ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দল।

যে লক্ষ্য নিয়ে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ, সেটি পূরণ হয় প্রথম ওভারেই। নাঈমের দারুণ এক ডেলিভারিতে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড প্রিন্স মাসভাউরে। প্রথম ইনিংসে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বেশ ভুগিয়েছিলেন বাংলাদেশকে।

নাইটওয়াচম্যান ডোনাল্ড টিরিপানো বিদায় নেন নাঈমের পরের বলেই। অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলর সামলান হ্যাটট্রিক বল। কেভিন কাসুজার সঙ্গে মিলে পার করে দেন দিন।

মেঘলা আকাশের নিচে আলোকস্বল্পতায় শের-ই-বাংলার ফ্লাড লাইট জ্বলে উঠেছিল বেশ আগেই। এই আলোতে খেলা চালানোয় ড্রেসিংরুমের সামনে জিম্বাবুয়ে কোচ লালচাঁদ রাজপুত কথা বললেন চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে। লাভ তাতে কিছু হয়নি।

জিম্বাবুয়ের সামনে এখন ম্যাচ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ। বৃষ্টি না হলে কাজটি তাদের জন্য হবে ভীষণ দুঃসাধ্য। দুঃসময়ের বলয়ে থাকা বাংলাদেশের সামনে খানিকটা স্বস্তির জয়ের হাতছানি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৬৫

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫৪ ওভারে ৫৬০/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (আগের দিন ২৪০/৩) (তামিম ৪১, সাইফ ৮, শান্ত ৭১, মুমিনুল ১৩২, মুশফিক ২০৩*, মিঠুন ১৭, লিটন ৫৩, তাইজুল ১৪*; টিরিপানো ১৫-৩-৪০-১, নিয়াউচি ১৩-২-৪১-১, রাজা ২২-১-৭৫-০, টিশুমা ১২-০-৪৬-১, এনডিলোভু ৯-১-৩৩-০)।

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৫ ওভারে ৯/২ (মাসভাউরে ০, কাসুজা ৮*, টিরিপানো ০, টেইলর ১*; নাঈম ৩-১-৪-২, তাইজুল ২-০-৫-০)।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<90006 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1