সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা, চারপাশ ঘোলাটে। কিন্তু প্রকৃতির প্রভাবে নয়, জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা চোখে অন্ধকার দেখল নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলামের স্পিনে। লড়াই জমল না তেমন। চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনেই ম্যাচ জিতে নিল বাংলাদেশ।
মিরপুর টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টের চতুর্থ দিনে সোমবার জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১৮৯ রানে।
শক্তি-সামর্থ্যে অনেক পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় খুবই প্রত্যাশিত। তবে দুঃসময়ের বলয়ে থাকা দলকে খানিকটা স্বস্তি দেবে এমন দাপুটে জয়।
এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার ইনিংস জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় ছিল ইনিংস ও ১৮৪ রানে।
সব মিলিয়ে ১১৯ টেস্টে বাংলাদেশের এটি চতুর্দশ জয়। অর্ধেক জয়ই এসেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশের বোলিং নায়ক নাঈম। অভিষেক টেস্টে ৫ উইকেটের পর পঞ্চম টেস্টে এসে আবার ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন তরুণ অফ স্পিনার। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ম্যাচে নিয়েছেন ৯ উইকেট।
২ উইকেটে ৯ রানে দিন শুরু করেছিল জিম্বাবুয়ে। কন্ডিশন ছিল পেস সহায়ক। সকালে ৪ ওভারের স্পেলে আবু জায়েদ চৌধুরী বোলিং করেছেন দারুণ। তবে সাফল্য এসেছে স্পিনেই। কেভিন কাসুজাকে ফিরিয়ে দিনের প্রথম উইকেট নেন তাইজুল।
আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলর খেলছিলেন বেশ আস্থায়। কিন্তু আচমকাই যেন হারিয়ে ফেলেন নিজেকে। নাঈমকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ১৭ রানে ফেরেন দলকে হতাশ করে।
লড়াই যা একটু হয়েছে, পরের জুটিতে। ক্রেইগ আরভিন ও সিকান্দার রাজা দেখিয়েছেন, এই উইকেটে বাংলাদেশের
স্পিনারদের খেলা খুব কঠিন নয়। শুধু প্রতিরোধ নয়, প্রতি আক্রমণও করেছেন দুজন।
তবে ৬০ রানের এই জুটির শেষটা জিম্বাবুয়ের জন্য ছিল চরম হতাশার। অহেতুক রানের চেষ্টায় মুমিনুল হকের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান দারুণ খেলতে থাকা আরভিন। ৬ চার ও ১ ছক্কায় জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক করেছেন ৪৯ বলে ৪৩।
এরপর মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরেছেন ৩৭ রান করা রাজা, তামিম ইকবালের দারুণ ক্যাচ ১৮ রানে ফিরিয়েছে রেজিস চাকাভাকে।
টাইমাইসেন মারুমা চেষ্টা করছিলেন লড়াইয়ের। ৪১ রানে তাকে থামিয়ে নাঈম পূর্ণ করেছেন ৫ উইকেট। ম্যাচের ইতি হয়েছে তাইজুলের হাত ধরে।
প্রথম ইনিংসের হতাশা ভুলে দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুলের শিকার ৪টি। বাংলাদেশের দুই স্পিনার মিলে ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট।
বাংলাদেশের পরের টেস্ট এপ্রিলের শুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে। করাচিতে চ্যালেঞ্জ হবে আরও অনেক কঠিন। তবে সেই পরীক্ষার জন্য অন্তত আত্মবিশ্বাসের রসদ মিলতে পারে এই জয় থেকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৬৫
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৫৬০/৬ (ইনিংস ঘোষণা)
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৫৭.৩ ওভারে ১৮৯ (আগের দিন ৯/২) (মাসভাউরে ০, কাসুজা ১০, টিরিপানো ০, টেইলর ১৭, আরভিন ৪৩, রাজা ৩৭, মারুমা ৪১, চাকাভা ১৮, এনডিলোভু ৪, টিশুমা ৩, নিয়াউচি ৭*; নাঈম ২৪-৬-৮২-৫, তাইজুল ২৪.৩-৭-৭৮-৪, আবু জায়েদ ৪-৩-৪-০, ইবাদত ৫-১-১৬-০)
ফল: বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম