শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চিকিৎসকের অভাবে সেবা ব্যাহত

ভূঞাপুর হাসপাতাল
আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর
  ০২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ভূঞাপুর ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে প্রায় পঁাচ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়েছে। ডাক্তার সংকটের কারণে বৃহৎ এই জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা থেকে দিনের পর দিন বঞ্চিত হচ্ছে। সংকট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, ৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট চলছে দীঘির্দন ধরে। এ সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো পদক্ষেপ নেই। হাসপাতালটি ৪টি উপজেলার সীমান্তবতীর্ হওয়ায় উপজেলাসহ পাশ্বর্বতীর্ ঘাটাইল, গোপালপুর ও কালিহাতী উপজেলা থেকে রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক, নাসর্, যন্ত্রপাতি না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সরকারি বিধি মোতাবেক বিশেষজ্ঞসহ ২১জন চিকিৎসকের অনুমোদন রয়েছে। কাগজে-কলমে ৫০ শয্যা হাসপাতালে ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে ৯টি। বাকি ১২ জনের মধ্যে ২ জন রয়েছে ডেপুটেশনে। এর মধ্যে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কমর্কতার্ ১ জন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ১ জন, ইউনানি ১জন ও ১ জন ডেন্টাল সাজর্ন রয়েছে। বাকি ৬ জন ডাক্তারের মধ্যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিনের বেশি অফিস করেন না। দীঘির্দন যাবৎ ৯টি শূন্যপদ ও ২জন ডেপুটেশনে থাকায় বৃহৎ এই জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ড্রেসারশিপ কাম কম্পিউটার ম্যান মিজানুর রহমান দীঘর্ পঁাচ বছর যাবৎ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ টাঙ্গাইল হাসপাতালে ডেপুটেশনে রয়েছে। স্বাস্থ্য সহকারী, টেকনিশিয়ান, ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ড, ও এমএলএসএস পদে ১টি করে পদ থাকলেও কোনো জনবল নেই। অফিস সহকারী ৩ জনের মধ্যে রয়েছে মাত্র ১ জন, স্বাস্থ্য সহকারী পদ শূন্য রয়েছে ৫টি। হাসপাতালে সিকিউরিটি গাডর্ থাকার কথা ৩ জন সেখানে রয়েছে মাত্র ১ জন। যা রাতে ডিউটি করলে দিনে পরিণত হয় ক্রিকেট খেলার মাঠ আর দিনে ডিউটি করলে রাতে বসে মাদকের হাট।

এছাড়া হাসপাতালে একটি এক্সরে মেশিন তিন বছর যাবৎ অচল। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও সনোলিস্ট না থাকায় সেটিও বিকল। প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে নামে মাত্র কিছু পরীক্ষা করা হয়। দীঘির্দনের পুরনো অ্যাম্বুলেন্সটিও ছয় মাস আগে দুঘর্টনার কবলে পরে ধুমড়েমুচড়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের উদাসীনতার কারণে এ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়েছে।

সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার জাহিদুজ্জামান জুয়েল জানান, ডেপুটেশনে থাকা ডাক্তারদের হয় বদলি করা হোক না হয় হাসপাতালে ডিউটি করুক।

এদিকে হাসপাতালে কমর্রত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমর্কতার্ ডা. মো. আবু সামা জানান, শূন্যপদগুলো পূরণ করলেই ডাক্তার সংকটের সমাধান হয়ে যাবে।

এছাড়া উপজেলা নিবার্হী কমর্কতার্ ঝোটন চন্দ জানান, কতৃর্পক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সমস্যার দ্রæত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান ও হাসপাতাল পরিচালনা পষের্দর সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম জানান, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য ঊধ্বর্তন কতৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে