কুড়িগ্রাম জেলার প্রাচীন নৌবন্দর চিলমারীকে নতুন করে চালুকরণ কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রæতির গত দু’বছরেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশায় ভুগছে চিলমারীবাসী।
জানা যায়, চিলমরীর এ বন্দরটিতে এক সময় দেশ-বিদেশ থেকে জাহাজে করে ব্যবসার জন্য আসতো বিদেশিরা। বন্দরে রাত-দিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ী ও পাইকারদের আনাগোনায় ছিল কমর্মুখর পরিবেশ। ব্রহ্মপুত্রের কোলঘেঁষে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে ছিল কমর্মুখর পরিবেশ। এখানে ছিল প্রশাসনিক ভবন, কাস্টম্স অফিস এবং বড় বড় পাটের গোডাউন। শুধু যে ব্যবসায় জমজমাট তা কিন্তু নয়, যাত্রী পারাপারের জন্য রয়েছে ফেরিঘাট। পাশ্বর্বতীর্ দেশ ভারতের আসামের সঙ্গে ছিল ফেরি পারাপার। জুট ট্রেডিং কোম্পানিসহ প্রায় ৩০টি পাটকল ও বিভিন্ন কোম্পানি এখানে অবস্থান করত। এ কোম্পানিগুলোতে প্রায় ২০০ জন শ্রমিক কাজ করত প্রতিদিন। ভারত থেকে আসা কয়লা, তেলসহ নানা ধরনের গুরুত্বপূণর্ দ্রব্যাদি জাহাজে করে চিলমারি হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেত। চিলমারী বন্দরটি পূণর্তা ফেরাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পূণাঙ্গ নৌবন্দরের ঘোষণা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মন্ত্রী শাজাহান খান চিলমারী নদীবন্দরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাসহ উদ্বোধন করেন। এ অঞ্চলের মানুষ আবার স্বপ্ন দেখা শুরু করে।
চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের চেয়াম্যান আজগার আলী বলেন, ‘চিলমারীর বন্দর চালু হলে হামরা এলাকার মানুষ আগের মতো কাম করি খাবার সুযোগ পাইতো’।
কুলি আশরাফ বলেন, ‘বন্দরটি চালু না থাকায় এখন হামরা বেকার হয়া আছি, এখন সংসার চালাইতে খুব কষ্ট হয়’।
দীঘির্দন বন্দরের কাযর্ক্রম চালু না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্বপ্নে বুকবঁাধা মানুষগুলো। অনেক শ্রমিক এ বন্দর চালু হওয়ার আশায় রয়েছেন। বন্দরটি চালু হলেই তাদের স্বপ্নটা পূরণ হবে বলে মনে করেন তারা। অতীতের সেই সোনালী দিনের আলোর মুখ দেখবে এই আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন এ অঞ্চলের মানুষরা। বতর্মান ঘোষিত নদীবন্দরকে নিয়ে একটু বেশিই আশা করেছিল সাধারণ জনগণ, নদী সংস্কার ড্রেজিং করা, নদীর দুই তীর বঁাধা ইত্যাদি কাজ করা হলে সহজে জাহাজ চলাচলে এলাকার উন্নয়নের ছেঁায়ায় ভরিয়ে উঠতো। কিন্তু উদ্বোধনের দুই বছর অতিবাহিত হলেও চিলমারী নদীবন্দরের কাযর্ক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে আজও চালু না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি খুব দ্রæত এ বন্দরটি চালু হোক।