দেড় যুগের বেশি সময়েও যশোরের শহীদ সাংবাদিক শামছুর রহমানের হত্যাকাÐের বিচার সম্পন্ন হয়নি। বরং গত ১৩ বছর ধরে আইনের মারপ্যঁাচে আটকে রয়েছে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া। এ হত্যাকাÐের বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার ও যশোরের সাংবাদিক সমাজ। যদিও সরকার চাইলেই এ হত্যাকাÐের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব বলে মন্তব্য আইনজীবীদের। এরই মধ্যে দিয়ে ১৬ জুলাই নিমর্ম এ হত্যাকাÐের ১৮তম বাষির্কী পালিত হয়েছে। প্রথিতযশা সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে জনকণ্ঠ যশোর অফিসে কমর্রত অবস্থায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে সাংবাদিক শামছুর রহমান খুন হওয়ার পর ২০০১ সালে সিআইডি পুলিশ এই মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চাজির্শট দাখিল করে। সে সময় বিগত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েক আসামির আগ্রহে মামলার বধির্ত তদন্ত করে শামছুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সাংবাদিক নেতা ফারাজী আজমল হোসেনকে নতুন করে আসামি করা হয়।
একইসাথে মামলার গুরুত্বপূণর্ সাক্ষীকে বাদ দিয়ে সাক্ষী করা হয় আসামিদের ঘনিষ্ঠজনদের। এতে একদিকে মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়; অন্যদিকে দুবর্ল হয়ে যায় চাজির্শট। এরপর বিতকির্ত ওই বধির্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর ২০০৫ সালের জুন মাসে যশোরের স্পেশাল জজ আদালতে এই মামলার চাজর্ গঠন হয়। ওই বছরের জুলাই মাসে বাদীর মতামত ছাড়াই মামলাটি খুলনার দ্রæত বিচার আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এ অবস্থায় মামলার বাদী শহীদ শামছুর রহমানের সহধমির্ণী সেলিনা আকতার লাকি বিচারিক আদালত পরিবতের্নর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোটের্ আপিল করেন।
পরে মামলায় বধির্ত তদন্তে সংযুক্ত আসামি ফারাজী আজমল হোসেন উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন। সেই রিটের নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলার সমস্ত কাযর্ক্রম স্থগিত রয়েছে।
নিহতের সহোদর ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন জেইউজে সভাপতি সাজেদ রহমান জানান, একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে সাংবাদিক নেতাদের পক্ষ থেকে শামছুর রহমান হত্যাকাÐের বিচারের দাবিটি গুরুত্বের সাথে তোলা হয়। কিন্তু এ নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। উচ্চ আদালতের নিদেের্শর কারণে শামছুর রহমান হত্যা মামলার বিচারকাজ বন্ধ হয়ে আছে উল্লেখ করে যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম পিটু জানান, তাদেরও প্রত্যাশা আপিলের দ্রæত নিষ্পত্তি হয়ে মামলার কাযর্ক্রম আবার শুরু হবে।
প্রসঙ্গত: এ মামলার চাজির্শটভুক্ত ১৬ জনের মধ্যে খুলনার শীষর্ সন্ত্রাসী মুশফিকুর রহমান হিরক পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছে। আরেক আসামি খুলনার ওয়াডর্ কমিশনার আসাদুজ্জামান লিটু র্যাবের ক্রসফায়ারে, কোটচঁাদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন কালু হাটের্স্ট্রাকে এবং যশোর সদরের চ‚ড়ামনকাঠির আনারুল প্রতিপক্ষের হামলায় মারা গেছেন। বাকি আসামিরা জামিনে রয়েছেন।