জং ধরে টিনের চাল নষ্ট হয়ে গেছে। দরজা-জানালাও ভেঙে গেছে। দীর্ঘ ১৮ বছরেও সংস্কার না করায় এ রকম জরার্জীণ ফুলখালী আশ্রয়ণ কেন্দ্রের অধিকাংশ ঘর। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের অবস্থিত এ প্রকল্পে ৪০টি পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।
জানা যায়, ১৯৯৭ সাল থেকে সরকার পর্যায়ক্রমে এ উপকূলীয় অঞ্চলে আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ করেন। ২০০১ সালে সরকার ফুলখালী আশ্রয়ণ কেন্দ্রের এ ঘরগুলো ভূমিহীন পরিবারদের বরাদ্ধ দেয়। ফুলখালী আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জরার্জীণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবুও সেখানে বসবাস করছেন অসহায় হতদরিদ্র ভূমিহীন লোকেরা। অর্থের অভাবে নিজেদের উদ্যোগে ঘরগুলো সংস্কার করতে না পারায় হতাশায় ভুগছেন তারা।
এ কেন্দ্রে ৪০টি পরিবারের দু'শতাধিক লোক বসবাস করছেন। এ ঘরগুলো সংস্কার না হওয়ায় চালের টিন, নাট-স্ক্রু, লোহার উপকরণ ও সিমেন্টের পিলার খসে পড়ে ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বসবাসের অনুপযোগী এসব ঘরে এখন ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় ঘরের মেঝেতে। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বছরের পর বছর তারা সেখানে জীবন যাপন করে আসছেন।
সরকারিভাবে এ ঘরগুলো সংস্কার করা একান্ত জরুরি। ঘরগুলো সংস্কার করা না হলে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের কষ্টের সীমা থাকবে না। ভূমিহীন এসব পরিবারগুলো খেটে খাওয়া মানুষ। ওরা দিন আনে দিন খায়। ওরা একটু আশ্রয় চায়। ওদেরও আছে একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার।
আশ্রয়ণের আবু কালাম ব্যাপারী, বশির ফকির, আলামিন ব্যাপারী, ফিরোজা বেগম, হাসিনারা বেগম ও চানভানু জানান, ঘরের চালের ভাঙা টিন দিয়া বৃষ্টির পানি পড়ে। তখন বিছানা ও জামা কাপড় পানিতে ভিজে যায়। বৃষ্টির কারণে রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। নাট-স্ক্রু ও সিমেন্টের খুঁটি খসে পড়েছে। একটু ঝড় হলেই ঘরগুলো নড়বড় করে। তখন ভীষণ ভয় লাগে। এই ভাবে কষ্ট করে আমাদের দিন কাটাতে হয়। একের পর এক বন্যা আমাদের ঘর-বাড়ি তছনছ করে ফেলেছে। সরকার তা ঠিক করে দিচ্ছেন না। টাকার অভাবে আমরাও ঠিক করতে পারছি না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান হাজী মো. রাকিব মোলস্না জানান, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘরগুলো সংস্কার না করার কারণে দিন দিন তা আরও জরার্জীণ হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একটু নজর দিলে আশ্রয়ণবাসীর এ কষ্ট আর থাকবে না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি জানাব। পরবর্তীতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।