বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গো-খাদ্যের তীব্র সংকট

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
  ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে শ্যালো নৌকায় খড় বিক্রি হয় -যাযাদি

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম শাহজাদপুরের গো-চারণ ভূমি। ফলে দুগ্ধ শিল্পের জন্য বিখ্যাত এ অঞ্চলের খামারিরা গো-খাদ্য সংকটে ভুগছে। সেই সাথে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারের মালিকরা। পানির প্রবল তোপে বড়াল নদীর তীরে রাউতারা-নিমাইচড়া বেড়িবাঁধ ভেঙে মূলত গো-চারণ ভূমির বিশাল এলাকা মুহূর্তেই পস্নাবিত হয়। সঙ্গে সঙ্গে চারণ ভূমির হাজার হাজার গরু শ্যালো নৌকা দিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। কিন্তু গো-খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ দুগ্ধ উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসেবে শাহজাদপুরের পরিচিতি দেশে-বিদেশে। এ জনপদে রয়েছে হাজার হাজার দুগ্ধ গরুর খামার। আর এর সুবাদে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা কারখানায় প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করে আসছে। কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে উপজেলার বেশির ভাগ অঞ্চল পস্নাবিত হওয়ায় গো-খামারিরা দুগ্ধ গাভি নিয়ে বসতবাড়িতে রাখতে হিমসিম খাচ্ছেন। সরেজমিন ঘুরে উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রেশমবাড়ি ও বাথান এলাকার গো-খামারগুলোর বেহাল অবস্থা লক্ষ করা গেছে। খামারের ঘরগুলো পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। গরুগুলো নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছে। এ দিকে বন্যার পানিতে চারণ ভূমির ঘাস ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্য : খড়, খৈল ও ভুসির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। চলনবিল অঞ্চল থেকে নৌকাযোগে ব্যবসায়ীরা খড় শাহজাদপুরে বিক্রি করতে আসছেন। ১৯৭৩ সালে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়িতে স্থাপনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার দুগ্ধ গরুর খামার। শাহজাদপুরের পশ্চিমাঞ্চলে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গো-চারণ ভূমি দুগ্ধ শিল্পের উন্নয়নে ভূমিকা রাখলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দুগ্ধ গরুর খামার গড়ে রাতারাতি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে থাকে। শাহীওয়াল, হরিয়ানা, মুলতানী, সিন্ধি, মন্টেগোমারী জাতের স্বাভাবিক গরুর বিভিন্ন প্রজাতির প্রজনন ঘটিয়ে জাত সৃষ্টি করে। এসব গরুর দুধ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে উৎকৃষ্ট প্রজাতির এবং বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি ফ্যাট-সমৃদ্ধ। ১৯৭৭ সালে বাঘাবাড়ি মিল্ক ভিটাকে দুগ্ধ সমবায় ইউনিয়নের নামে নতুন নামকরণ করলে সদস্যভুক্ত এসব খামারি প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করে মিল্কভিটা কারখানায়। এসব দুধ দিয়ে সাধারণত গুঁড়োদুধ, আইসক্রিম, ঘি, মালাই, মাঠা, রসমালাই, চকলেট, চকোলেটবার ইত্যাদি তৈরি করা হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে গো-খামারি এবং পোতাজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, গো-চারণ ভূমির পাশাপাশি পোতাজিয়া রেশমবাড়ির সিংহভাগ গো-খামার ডুবে গেছে। আমরা দুগ্ধ গাভি ও ষাঁড় গরু নিয়ে খুব কষ্টের মাঝে আছি। বিস্তীর্ণ চারণভূমি ডুবে যাওয়ায় সুবজ ঘাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গরুগুলো। সেই সঙ্গে গো-খাদ্যের মূল্যও আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা খামারিরা চরম বিপাকে আছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58406 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1