চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলের বেড়িবাঁধ ফের ভাঙনের কবলে। সাগরের উত্তাল ঢেউ, নির্মাণ কাজে অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া বাতিঘর থেকে গহিরা বাইগ্যার ঘাট, বার আউলিয়ার মাজার এলাকা পর্যন্ত বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন ধরেছে। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে উপকূলের ৫০ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া বাতিঘর এলাকা থেকে গহিরা, বার আউলিয়া, ধলঘাট ও ফকিরহাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন ধরেছে। বাঁধটি ১৬ ফুট প্রস্থ হলেও ভাঙনকবলিত অংশে এর প্রস্থ দাঁড়িয়েছে ৪-৫ ফুটের কাছাকাছি। সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে গহিরা বাইগ্যার ঘাট থেকে বারআউলিয়া অংশে। বেড়িবাঁধের ভাঙনের কারণে গত দুই মাস ধরে জোয়ারের পানি উঠা-নামা করছে। ফলে ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত অর্থ-বছরে উপকূল সুরক্ষায় রায়পুর ইউনিয়নের বাইগ্যারঘাট থেকে ছিপাতলী ঘাট পর্যন্ত ১৯৪২ মিটার এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কারের কার্যাদেশ দেয়া হয়। প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ের এ কাজ পায় তাহের ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ বছরের জুন মাসে কাজের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত কাজ বুঝে পায়নি পাউবো। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজের মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করেছে বলেও জানায় পাউবো কর্তৃপক্ষ। এই সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই সাগরের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধের আধা কিলোমিটার অংশ ভেঙে গেছে। রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজে যথেষ্ট অনিয়ম, সিডিউল মোতাবেক ও যথাসময়ে কাজ না করার কারণে উপকূলের মানুষ বার বার দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। একশ্রেণির ঠিকাদার ও স্থানীয় কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির কারণে বেড়িবাঁধের কাজ যথাযথভাবে হয়নি। এ কারণে এলাকার মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
চট্টগ্রাম পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অলি আফাজ চৌধুরী বলেন, বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল গত শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে। ইতিমধ্যে মাটিকাটার কাজে অনিয়ম ধরা পড়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। বেড়িবাঁধ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।