সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার এক গ্রামের নাম চরকাদাই। জনসংখ্যা ও ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে উপজেলার অন্যতম বৃহত্তম গ্রাম এটি। গ্রামের উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণ-পূর্বাংশ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। গ্রামটির সিংহভাগ বেলতৈল ইউনিয়ন আর কিছু অংশ পোরজনা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। এই গ্রামে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামে ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কিন্ডারগার্টেন, একটি হাট-বাজার, একটি দুগ্ধ সমবায় সমিতি, ২টি হাফেজিয়া মাদ্রাসা আর ৫টি মসজিদ রয়েছে। বিল আর নদীবেষ্টিত চরকাদাই গ্রামের নামের সঙ্গে আদর্শ এলাকার তকমা লেগেছে ২ যুগ আগে। কিন্তু বাস্তবচিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
নাগরিক ও মৌলিক সেবাবঞ্চিত চরকাদাই গ্রামের মানুষ। আধুনিকতার ছোঁয়া ও নগরায়ণের যুগেও যোগাযোগের জন্য ভালো রাস্তা নেই গ্রামে। ফলে পায়ে হেঁটেই গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে হয় মানুষের। কাদাইবাদলা বাজার থেকে চর কাদাইপূর্বপাড়া বরফ মিল পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাহজাদপুর উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চরকাদাই গ্রামটি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এলাকার শতাধিক মানুষ সংস্কার করছেন। কথা হলো উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুলস্নাহ আল মাহবুবের সঙ্গে। তিনিই স্বেচ্ছাশ্রমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের উদ্যোক্তা। তিনি জানান, গ্রামের মাঝখানেই তার বাড়ি। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কয়েক বছর আগে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে নেয়ায় সময় পথেই মৃতু্য হয়। সে কষ্ট এখনো আছে তার। তাই ঢাকায় বাস করলেও গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি মজবুত কাঁচা সড়ক নির্মাণের চেষ্টা করছেন তিনি। তার বিশ্বাস এবার এগিয়ে আসবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বেলতৈল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন ফুল বলেন, গ্রামটি সত্যিই অবহেলিত এবং পাকা সড়ক তৈরি করা জরুরি। কাঁচা সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মাঝেমধ্যে মাটি ফেলা হয়।
পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মুকুল বলেন, চরকাদাই ২নং ওয়ার্ড তার ইউনিয়নের আওতায়। বড় সড়ক তৈরির বাজেট নেই, তবুও কর্মসূচির কিছু প্রকল্প দিয়ে প্রতিবছর কিছুটা মাটি ভরাট করা হয়। যাতায়াতে যাতে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমে সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।