শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
অরক্ষিত জন্মভিটা

চিহ্নিত হয়নি ভাষাশহিদ রফিকের কবর

মোবারক হোসেন, সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ)
  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে প্রথম শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদ। যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছে তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৫২ থেকে ২০২০ অতিবাহিত হয়েছে দীর্ঘ ৬৮ বছর। কিন্তু আজও চিহ্নিত হয়নি জাতীর এই সূর্য সন্তানের কবরটি। সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি তার জন্মভিটাও। ভাষা দিবসে স্মৃতি জাদুঘর ও শহিদ মিনার চত্বরে হাজারও মানুষের ঢল নামলেও ভেতরের খবর নেয় না কেউ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে পারিল গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রফিকনগর করা হয়। স্থানীয় সমাজহিতৈষী লে কর্নেল (অব.) মজিবুল ইসলাম খান পাশার দান করা ৩৪ শতাংশ জমির ওপর ২০০৮ সালে নির্মাণ করা হয় গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। দীর্ঘদিনেও তা পূর্ণতা পায়নি। সেখানে শহিদ রফিকের দুটি ছবি ও কিছু বই ছাড়া স্মৃতিবিজড়িত কিছুই নেই। এই ভাষাসৈনিকের ব্যবহূত চেয়ার-টেবিল, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি এবং নকশা করা রুমালসহ অনেক জিনিসপত্র থাকলেও এর কিছুই ঠাঁই পায়নি জাদুঘরে। ভবনটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে। চত্বরজুড়ে অনেক ফুলগাছ লাগানো হলেও পরিচর্যার অভাবে এখন সব গাছ মরে গেছে। জাদুঘরের হলরুমে প্রায়ই সালিস বসান স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদের বাড়ি ঘেঁষে নির্মিত শহিদ মিনারটিও অরক্ষিত। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বর্ষা ও ভারি বর্ষণে শহিদ মিনারটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় লোকজন।

এ ছাড়া শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদের জন্মভিটা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ২০০০ সালে বেসরকারি সংস্থা প্রশিকা দুটি আধাপাকা ঘর তৈরি করে দেয়। সেখানে বসবাস করে শহিদ রফিকের প্রয়াত ভাই আব্দুল খালেকের সত্তরোর্ধ্ব স্ত্রী গুলেনুর বেগম ও ভাতিজা শাহাজালালের পরিবার। বাড়িটিতে আত্মীয়স্বজন ও দর্শনার্থীদের থাকার উপযোগী কোনো ঘর নেই। নেই স্বাস্থ্যসম্মত একটি শৌচাগার।

শহিদ রফিকের একমাত্র জীবিত ভাই খোরশেদ আলম জানান, শহিদ রফিক উদ্দিন আহমদকে কবর দেওয়া হয় ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে। এখনো তার কবরটি চিহ্নিত করা হয়নি। কবরটি চিহ্নিত করে নামফলক লাগানো হলে শ্রদ্ধা নিবেদন করা যেত। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'ঈদ, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসসহ বিশেষ দিনে রাষ্ট্রের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সরকারপ্রধানের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ পান। কিন্তু ভাষা দিবসে ভাষাসৈনিকদের পরিবারের সদস্যরা এ ধরনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের জন্য এটা বেদনাদায়ক।'

সিঙ্গাইর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূঁইয়া জয় বলেন, রফিকের বাড়িতে যাওয়ার সড়কটি ভাঙাচোরা ও সরু। সড়কটি প্রশস্ত করা দরকার। দর্শানার্থীদের থাকা-খাওয়ার জন্য একটি ডাকবাংলো নির্মাণ ও রফিকের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি সংরক্ষণ করা এখন এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89388 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1