শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশাল নগর হয়ে উঠছে করোনার কেন্দ্রস্থল

যাযাদি ডেস্ক
  ৩১ মে ২০২০, ০০:০০

দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠছে বরিশাল নগর। গত ১২ এপ্রিল থেকে ৪৮ দিনে এ জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ২০৮ জনের। চলতি মাসের শেষ দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এর মধ্যে সিংহভাগ (১৫১ জন) বরিশাল নগরের।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৪৫৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০৮ জনই বরিশাল জেলার, যা বিভাগের মোট আক্রান্তের ৪৫ দশমিক ৩১ ভাগ। আবার বরিশাল জেলায় মোট আক্রান্ত ২০৮ জনের মধ্যে বরিশাল নগরেরই ১৫১ জন। বাকি ৫৬ জন হচ্ছেন জেলার ১০ উপজেলার।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাস সংক্রমণের পর্যায়গুলোকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম পর্যায় হচ্ছে বাইরের দেশে ভাইরাস ছড়িয়েছে, কিন্তু সেটি এখনো দেশে প্রবেশ করেনি। দ্বিতীয় পর্যায় হচ্ছে ভাইরাসটি বিদেশ থেকে আসা কারও মধ্যে পাওয়া গেছে। তৃতীয় পর্যায় হচ্ছে ভাইরাসটি বিদেশফেরত মানুষের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদেরও যখন সংক্রমিত করবে। যেটিকে লোকাল ট্রান্সমিশন বলা হয়। চতুর্থ পর্যায়টি হচ্ছে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন। যখন

\হএমন কারও দেহে ভাইরাসটি পাওয়া যায়, যার সম্প্রতি কোনো বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই বা সে রকম কারও সংস্পর্শে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এই পর্যায়কে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলেই সেটি মহামারিতে রূপ নেয়। বাংলাদেশ এখন কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে আছে।

বরিশালের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, গত ১২ এপ্রিল এই জেলার মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দুজন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ৪৮ দিনে বরিশাল জেলায় ২০৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, মোট আক্রান্তের ৫৮ জন নারী এবং ১৫০ জন পুরুষ। বয়সের হিসাবে, শূন্য থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আক্রান্ত ১৫ জন, ২০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত আক্রান্ত ১৬০ জন, ৫০ থেকে তার ওপরে ৩৩ জন।

আক্রান্তের গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বরিশাল জেলায় ১২ এপ্রিল প্রথম দুজন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত দিনে ২ থেকে ৮ জন শনাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২১ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তা অনেকটা বেড়ে দিনে ১১ থেকে ১৮ জন হয়েছে। ৭ মে পর্যন্ত বরিশাল জেলায় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৯ জন। এরপর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ জনে। তৃতীয় সপ্তাহে সংখ্যাটি হয় ১২৪ জন। আর ২১ থেকে ২৮ মে, অর্থাৎ শেষ সপ্তাহে এটি দাঁড়ায় ২০৮ জনে।

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আক্রান্তের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে যে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করে। ঈদকে সামনে রেখে লকডাউন শিথিল করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের উদাসীনতা এর জন্য দায়ী। ধারণা করা হচ্ছে, ঈদ বাজার নিয়ন্ত্রণে শিথিলতার কারণে এই সময়ে অস্বাভাবিক হারে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে বরিশাল নগরে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, 'এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সাধারণ মানুষের উদাসীনতা এবং লকডাউন শিথিলতার কারণে বরিশাল নগরে আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বাড়ছে। এটা রোধ করতে হলে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<100786 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1