করোনাভাইরাসে সংক্রমণের (কোভিড-১৯) উপসর্গ বা জ্বর, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে শুক্রবার বিকালের পর দেশের ১২ জেলায় আরও ২০ জনের মৃতু্য হয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুরে চারজন, চট্টগ্রামে এক এসআইসহ তিনজন, গাইবান্ধায় দুজন, ময়মনসিংহে শিক্ষকসহ দুজন, বরিশালে গৃহবধূ ও কৃষক, রাজবাড়ীতে স্কুলশিক্ষক, মৌলভীবাজারে ইলেকট্রিশিয়ান, জামালপুরে এক নারী, মানিকগঞ্জে তরুণী, রাঙামাটিতে বৃদ্ধ এবং ফেনী, মাগুরায় একজন করে মারা গেছেন।
আমাদের আঞ্চলিক অফিস, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ :
চাঁদপুর :চাঁদপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও চারজনের মৃতু্য হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত হাজীগঞ্জ উপজেলার পৃথক স্থানে ওই চারজনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত চার দিনে করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে মৃতু্য বেড়ে দাঁড়াল ১৯ জনে।
মৃত চার জন হলেন- হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী শ্রী রঞ্জিব কুমার রায়, বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সেন্দ্রা কৃষ্ণ চন্দ্র দাস, বাকিলার বাখরপাড়ার আবদুর রউফ অরুণ ও হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারস্থ এলাকার এক গৃহবধূ। তার নাম জানা যায়নি। মৃতদের সবার বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের কর্মকর্তা সোয়েব আহমেদ চিশতী জানান, মৃতদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম :চট্টগ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক এসআইসহ তিনজনের মৃতু্য হয়েছে।
সীতাকুন্ড থানা-পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তার নাম একরামুল ইসলাম। তিনি সীতাকুন্ড পৌর সদরের উত্তরবাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় একা থাকতেন।
শুক্রবার রাত বা শনিবার ভোরের দিকে তিনি মারা গেছেন বলে পুলিশের ধারণা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুন্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোলস্না।
ওসি ফিরোজ হোসেন মোলস্না বলেন, কয়েক দিন ধরে পরিদর্শক সুমন বণিকসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য অসুস্থ থাকায় তাদের ছুটি দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে বলেন তিনি। ২ জুন সুমন বণিক ও এক কনস্টেবল নমুনা দেন। শুক্রবার রাতে দুজনেরই করোনা পজেটিভ আসে। শুক্রবার রাতে এসআই একরামুল ইসলাম জানান, তার জ্বর ১০০ ডিগ্রির কাছাকাছি। পাশাপাশি করোনার অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। শনিবার তাকে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে বলেন তিনি। কিন্তু সকালে জানতে পারেন, ওই পুলিশ সদস্য মারা গেছেন।
থানার এসআই টিবলু মজুমদার বলেন, প্রতিদিন সকালে ওসি ছুটিতে থাকা প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে একরামুলকে একাধিকবার ফোন দেওয়ার পরও তিনি ফোন ধরেননি। পরে বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়। দেখা যায়, একরামুল ইসলাম মৃত অবস্থায় খাটের উপর শুয়ে আছেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাত ঘণ্টার ব্যবধানে মারা গেলেন দুই ভাই। শুক্রবার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বড় ভাই মো. শাহ আলম (৩৩)। তার সাত ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে একই হাসপাতালে মারা যান ছোট ভাই মোহাম্মদ শাহজাহান (৩০)।
এদের মধ্যে বড় ভাই শাহ আলম মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী এবং ছোট ভাই শাহজাহান কাপড় ব্যবসায়ী।
মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাটহাজারী উপজেলা সদরের পূর্ব দেওয়ান নগর জোহরা বাপের বাড়ি এলাকার এই দুই ভাই করোনার উপসর্গ নিয়ে ১ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাদের করোনার নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়। নমুনার রিপোর্ট আসার আগেই শুক্রবার বিকালে এবং রাতে পরপর দুই ভাই মারা যান।
গাইবান্ধা : করোনার উপসর্গ
নিয়ে গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃতু্য হয়েছে। একজন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার এবং অপরজন পলাশবাড়ী উপজেলার। দুজনই পঞ্চাশোর্ধ্ব।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, উপজেলা পরিষদ চত্বরের চায়ের দোকানি (৫২) গত এক সপ্তাহ থেকে জ্বর, সর্দি, কাশিতে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টায় তিনি মারা যান। এরপর ভয়ে পরিবারের লোকজন তার কাছে যাননি। প্রশাসনের লোকজন তার লাশ পাহারা দেন। শনিবার বেলা ১১টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গোবিন্দগঞ্জ থানা-পুলিশ, উপজেলা ভূমি মসজিদের ইমাম আরিফ বিলস্নাহ, মুয়াজ্জিন মোফাজ্জল হোসেন ও গ্রামবাসীর সহায়তায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদার রহমান বলেন, উপজেলা সদরের প্রফেসরপাড়া এলাকার এক মুক্তিযোদ্ধা (৬৫) সর্দি, কাশি ও জ্বরে ভুগছিলেন। তিনি হোমিও চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তিন দিন ধরে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি বাড়িতে মারা যান। দুপুর দেড়টায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স থেকে মুক্তিযোদ্ধার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ :ময়মনসিংহের ত্রিশালে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ দুজনের মৃতু্য হয়েছে। কামরুল হুদা নামের ওই শিক্ষক উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের মধ্য বালিপাড়া গ্রামের মৃত বালাম মিয়ার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়নের ধলা আদর্শ শিশু নিকেতনের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন ধরে কামরুল হুদা জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি স্থানীয়ভাবেই জ্বর ও ঠান্ডার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শুক্রবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহের এস.কে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল ৮টার দিকে তার মৃতু্য হয়। মৃতু্যর পর তার নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীররামপুর গ্রামের হাসনা হেনা বেগম (৬৫)। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সেই উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, দুজনেরই নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল :বরিশালের গৌরনদী পৌর সদরে ও পাশের আগৈলঝাড়া উপজেলায় শুক্রবার জ্বর-শ্বাসকষ্টে দুজনের মৃতু্য হয়েছে। তারা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ছিলেন কি না জানতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইয়ে্যদ মোহাম্মদ আমরুলস্নাহ বলেন, উপজেলার এক গৃহবধূ (৪০) কয়েক দিন ধরে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে থেকে নিজেদের মতো চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অবস্থার অবনতি ঘটলে শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। বিকালে নিজ বাড়িতে ওই নারী মারা যান। পরে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় রাতে লাশ দাফন করা হয়।
আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামুন আল বখতিয়ার বলেন, উপজেলার এক কৃষক (৪৫) গত কয়েক দিন ধরে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। রাতেই তার নুমনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়। রাতে সামাজিক সংগঠন মনোরঞ্জন ঘটক চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের সদস্যরা তার দাহকার্য সম্পন্ন করে।
রাজবাড়ী :রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ আইডিয়াল হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক, ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা নিউনেশনের গোয়ালন্দ উপজেলার সাবেক প্রতিনিধি রিয়াজুল ইসলাম মোলস্না (৫২) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স থেকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তার বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভার কলেজপাড়া মহলস্নায়। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জানাজা শেষে স্থানীয় পৌরসভার কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, স্কুলশিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় ফরিদপুর থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তার পরিবারসহ সংস্পর্শে আসা লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
মৌলভীবাজার :করোনা উপসর্গ নিয়ে মৌলভীবাজার পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের গোবিন্দশ্রী এলাকার ইলেকট্রিশিয়ান কমরু মিয়া নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন।
তিনি কিছুদিন থেকে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। গত এক সপ্তাহ থেকে তার জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শুক্রবার রাতে তার মৃতু্য হয়।
কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ব্যক্তির শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে। মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৌলভীবাজারের তাকরীম ফাইন্ডেশনের সদস্যরা গোসল, দাফন ও কাফনে সহযোগিতা করেন।
জামালপুর :জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকাফেরত এক নারীর মৃতু্য হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নে তিনি মারা যান। মৃত ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন।
ওই নারী স্বামীর সঙ্গে ঢাকার মুগদা এলাকায় থাকতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই নারী তার স্বামী ও সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সম্প্রতি তার জ্বর, কাশি, ঠান্ডাসহ করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। গত বুধবার তিনি গ্রামে ফেরেন। সেখানে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সাহেদুর রহমান জানান, শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই নারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ :মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার এক তরুণী (১৮) মারা গেছেন। শনিবার সকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশ্বাদ উলস্নাহ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকার ধামরাই উপজেলার একটি গ্রামের ওই তরুণীকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।
এ দিন দুপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। তবে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে আটটার দিকে ওই তরুণীর মৃতু্য হয়।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশ্বাদ উলস্নাহ বলেন, সকালে তরুণীর লাশ পরিবারের লোকজন বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
রাঙামাটি :রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী বাজার এলাকার ৭০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। শনিবার বিকালে তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরের ভেদভেদী বাজারে বৃদ্ধের ছেলের দোকানের এক কর্মচারীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় দুই দিন আগে। শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তাদের পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করা হলেও সেই রিপোর্ট এখনো আসেনি। বৃদ্ধ লোকটি আগে থেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলেও জানিয়েছে তার পরিবার।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনাবিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা. মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, আবারও নমুনা সংগ্রহ করা হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তাকে দাফন করা হবে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলস্নব হোম দাশ জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তির করোনা উপসর্গ ছিল, সব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তার দাফন করা হবে।
মাগুরা :মাগুরায় করোনা উপসর্গ (শ্বাসকষ্ট ও জ্বর) নিয়ে শনিবার জাহিদুল মুন্সি (৮৫) নামে এক ব্যক্তির মৃতু্য হয়েছে। তার বাড়ি মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালী পূর্ব মুন্সিপাড়া গ্রামে।
মাগুরা সিভিল সার্জন ডাক্তার প্রদীপ কুমার সাহা জানান, সকালে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জাহিদুল মুন্সি নামের ওই ব্যক্তি মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃতু্য হয়। তার নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী : করোনার উপসর্গ নিয়ে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার এক বাসিন্দার মৃতু্য হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা শহরের নিজ বাসায় তার মৃতু্য হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তি (৬০) দীর্ঘদিন ধরে কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। কয়েক দিন আগে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। শুক্রবার দুপুর থেকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর তার শ্বাসকষ্ট ও কাশি তীব্র আকার ধারণ করলে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই বাসায় তিনি মৃতু্যবরণ করেন।
সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম বলেন, মৃতু্যর পর পরিবারের সদস্যরা লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। রাতেই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় বিশেষ ব্যবস্থাপনায় লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ইউএনও অজিত দেব দাফনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করেছেন।