শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সীমিত পরিসরে হলি আর্টিজানে নিহতদের স্মরণ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ জুলাই ২০২০, ০০:০০
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার চতুর্থ বছর পূর্তিতে বুধবার নিহতদের স্মরণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার-যাযাদি

করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে ফুলেল শ্রদ্ধায় হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ওর্ যাবের পক্ষ থেকে নিহতের উদ্দেশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বেলা ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিহতদের কারও পরিবারের সদস্যদের হলি আর্টিজানে আসতে দেখা যায়নি। ঘটনার চার বছর পূর্তিতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের শেষ স্থাপনাটিতে অন্যান্য বছরের মতো সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। জাপান, ইতালি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের বাইরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওর্ যাবের মহাপরিচালক শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হলি আর্টিজানে আসেন। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হন। জঙ্গিদের প্রতিহত করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার ও একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। ঘটনার পরদিন ভোরে সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। বুধবার সকাল থেকেই নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল গুলশান-২ এর ওই এলাকাজুড়ে। ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রবেশের আগে রাস্তার মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখে গুলশাল পুলিশ। পুলিশের পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে দায়িত্ব পালন করা একাধিক পুলিশ সদস্য জানান, এবার নির্ধারিত ব্যক্তিদের বাইরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়ার নির্দেশনা নেই। সাধারণের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। তবে নিহতদের স্বজন বা সাধারণ মানুষ কাউকে শ্রদ্ধা জানাতে আসতে দেখা যায়নি। বেকারির ওই ভবনের সামনে তৈরি করা শ্রদ্ধা মঞ্চে ফুল দিয়ে নিহতদের স্মরণ করেন ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা। এরপরই শ্রদ্ধা জানানর্ যাবের মহাপরিচালক। এরপর একে একে আসেন ইতালি, আমেরিকা ও জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিদেশি দূতাবাসের কেউ কথা বলেননি। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ওর্ যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন। ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, 'হলি আর্টিজান হামলার পর আমরা একের পর এক জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। জঙ্গিদের সক্ষমতা যে পর্যায়ে ছিল, সেটি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে। ইমপ্রোভাইজড বোমা বানানোর মতো এক্সপার্ট এখন আর নেই। তারা কেউ জেলে আছে অথবা বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছে। তাদের ছোটখাটো সক্ষমতা থাকতে পারে। কিন্তু বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটানোর সক্ষমতা নেই।' হলি আর্টিজানে হামলার পর বাংলাদেশ পুলিশের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে এবং একই সঙ্গে জঙ্গিবাদে জড়িতদের সক্ষমতা সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। করোনা পরিস্থিতিতে জঙ্গিরা অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে এবং তাদের প্রতিহত করা হচ্ছে জানিয়ে কমিশনার বলেন, 'করোনাকালে স্বাভাবিকভাবে মানুষ বাসায় বেশি থাকে। তারা অনেকেই ধর্মীয় সাইটগুলোতে বেশি ভিজিট করছে। এই সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছি। কাউকে জঙ্গিবাদে উদ্বুব্ধ করতে পেরেছে বা জঙ্গিবাদের কার্যক্রমকে পরিচালনার জন্য যে ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রয়োজন, সে ধরনের কোনো সংগঠন আবার গড়ে তুলতে পেরেছে, সে রকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।' র্ যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন বলেন, 'আমি মনে করি, আমরা এক ধাপ এগিয়ে আছি। জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা যখনই কোনো পরিকল্পনা করছে, তখনই আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে কাজ করছি এবং তাদের আটক করতে সক্ষম হচ্ছি। বর্তমানে জঙ্গিবাদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে