শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৮ জনের মৃত্যু

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

চলতি বছরের জুনে দেশে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৮ জন নিহত এবং ৫১৮ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ২০টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত, ৬০ জন আহত এবং ১০ জনের নিখোঁজ সংবাদ পাওয়া গেছে। রোববার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পাঠানো পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে চালক ১৬২ জন, পরিবহণ শ্রমিক ১২৫, পথচারী ১১৩, নারী ৬২, ৫৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে বিজিবি ২১, আনসার ১৮, পুলিশ ১৩ এবং পাঁচজন সেনাবাহিনীর সদস্য, শিশু ২৮, শিক্ষার্থী ২৩, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ১১, শিক্ষক সাত, চিকিৎসক এক, মুক্তিযোদ্ধা এক এবং একজন প্রকৌশলীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন চালক ১১৬ জন, পথচারী ৯৮, নারী ৪৯, পরিবহন শ্রমিক ৪৬, শিশু ২১, ছাত্রছাত্রী ১৯, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী আট, শিক্ষক সাত, চিকিৎসক এক, মুক্তিযোদ্ধা এক, প্রকৌশলী এক, পুলিশ পাঁচ এবং বিজিবি সদস্য দুইজন। এ সময় সংগঠিত দুর্ঘটনায় ৩৪ দশমিক নয় শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১২ দশমিক এক শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ নছিমন-করিমন, আট দশমিক ১১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, সাত দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, চার দশমিক ৩৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ৮ জুন। এইদিন মোট ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১০ জুন। এইদিন আটটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত এবং ১৪ জন আহত হন। মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ১২ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৫ দশমিক শূন্য আট শতাংশ খাদে পড়ে, সাত দশমিক ৫৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, এক দশমিক ১২ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই মাসে মোট সংগঠিত দুর্ঘটনার ৪৮ দশমিক ছয় শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১ দশমিক ৫৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংগঠিত হয়। এ ছাড়া সারাদেশে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার দুই দশমিক ৭৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, এক দশমিক ৯৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরে এবং এক দশমিক ১২ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়। মে মাসের তুলনায় বিগত জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ৫৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। নিহত ৫৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আহতের হার ৪৩ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং জবাবদিহিতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। সরকারের আন্তরিকতা ও বিগত নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গিকার থাকলেও বর্তমান সরকারের দুটি বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ট্রাফিকব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ছাড়া সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে