মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে পস্নাজমা নিয়ে সুস্থ হওয়া রোগীর তথ্য নেই

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের প্রধান ডা. তানজিলা তাবিদ বলেন, এখন পর্যন্ত ৪৫ ইউনিট পস্নাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে। যা ৪৫ জন রোগীকে প্রদান করা হয়েছে
যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুলাই ২০২০, ০০:০০

চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করতে পস্নাজমা দেওয়া হলেও রোগীদের সুস্থতার হার কেমন তা নিয়ে কোনো পরিসংখ্যান নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে।

চট্টগ্রামে চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. সমীরুল ইসলামকে চট্টগ্রামে প্রথম রক্তের পস্নাজমা দেওয়া হয়। এতে তিনি করোনা থেকে সুস্থ হলেও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে তাকে বাঁচানো যায়নি।

প্রথমদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে প্রচলিত পদ্ধতিতে পস্নাজমা সংগ্রহ করা হতো। পরবর্তীতে গত ৮ জুন থেকে পস্নাজমা এফারেসিস মেশিন সংযুক্ত করা হয় বিভাগটিতে।

জানা যায়, করোনার প্রথম চিকিৎসা শুরু হওয়া চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে কোনো রোগীকে এখন পর্যন্ত পস্নাজমা দেওয়া হয়নি। এছাড়া চমেক হাসপাতালে এ বিষয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে জেনারেল হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ৫ জনকে পস্নাজমা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ২ জন মারা গেলেও সুস্থ হয়েছে ৩ জন।

চমেক হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ৩৫ ডোনার তাদের রক্তের পস্নাজমা প্রদান করেছেন।

এছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা করোনা রোগীদের জন্য ৪৫ ইউনিট রক্তের পস্নাজমা সরবরাহ করেছে বিভাগটি। প্রতি এক ইউনিটে ২০০ মিলি পস্নাজমা রয়েছে যা ৪৫ জন করোনা রোগীকে প্রদান করা হয়েছে।

কিন্তু এই বিভাগে রক্তের পস্নাজমা দেওয়ার পরিসংখ্যান থাকলেও নেই পস্নাজমা নিয়ে সুস্থ হওয়া রোগীর পরিসংখ্যান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ তথ্য থাকলে পস্নাজমা ব্যবহারে সফলতার সঠিক সংখ্যা জানা যেত।

পস্নাজমা নিয়ে কাজ করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া মনে করেন, পস্নাজমা দেওয়া রোগীদের সুস্থ হওয়ার সঠিক তথ্য থাকলে পস্নাজমার সফলতা সহজে নির্ণয় করা সম্ভব হতো।

তিনি বলেন, পস্নাজমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিবডি আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া দরকার। তা না হলে রোগীকে পস্নাজমা দিয়ে কোনো সুফল মিলবে না। তাই রোগীকে পস্নাজমা দেওয়ার আগে পস্নাজমার এন্টিবডি টেস্ট করতে হবে।

'এতে করে পস্নাজমায় কি পরিমাণ এন্টিবডি রয়েছে তা জানা যাবে। এন্টিবডি টেস্ট কিট দিয়ে সহজে এ টেস্ট করা সম্ভব। এছাড়াও আরও একটি পদ্ধতিতে এন্টিবডি টেস্ট করা যায়। তবে ওই পদ্ধতিটি খুবই জটিল।'

তিনি আরও বলেন, রোগীকে পস্নাজমা দেওয়ার সঠিক সময়টি বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সময়মতো পস্নাজমা প্রয়োগ করা না হলে রোগী সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। যেহেতু করোনার কারণে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই এমন সময় এটি প্রয়োগ করতে

হবে যাতে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের প্রধান ডা. তানজিলা তাবিদ বলেন, এখন পর্যন্ত ৪৫ ইউনিট পস্নাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে। যা ৪৫ জন রোগীকে প্রদান করা হয়েছে।

'আমাদের হাসপাতালে স্ক্রিনিং ক্রসম্যাচিংয়ের খরচ বাবদ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ১ ইউনিটের জন্য ১ হাজার ৫০ টাকা। এই স্ক্রিনিং ক্রসম্যাচিং করতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কিট কিনতে হয়। তাই খরচ বেশি।'

পস্নাজমার এন্টিবডি পরীক্ষার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে অ্যান্টিবডি টেস্ট করার সুযোগ নেই। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অ্যান্টিবডি কিট আমদানি করতে অনুমতি দিয়েছে শুনেছি।

'আমরাও চেষ্টা করছি অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার। আমাদের দেশে এই কিট পাওয়া গেলে আমরাও শুরু করতে পারব।'

পস্নাজমার বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান আছে কিনা জানাতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চমেক হাসপাতাল ছাড়াও আরও দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পস্নাজমা সংগ্রহ করে। এছাড়া সিএমপির উদ্যোগে একটি পস্নাজমা ব্যাংকও করা হয়েছে।

'তবে যেহেতু এটি একটি চিকিৎসা পদ্ধতি তাই এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এমন কোনো নির্দেশনাও নেই।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<106021 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1