নাশকতার প্রস্তুতি নেয়ার সময় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মিজার্পুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন পুরাতন জেএমবির ৫ শীষর্ জঙ্গিকে বিদেশি পিস্তল গুলি ও ধারাল অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জেএমবির রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ইছাবা (সামরিক) এবং জেলবন্দি শাখার প্রধান শহিদুল্লাহ ওরফে মাসুম (৪৬), জেএমবির রাজশাহী বিভাগের ইছাবা প্রধানের দায়িত্বে থাকা বুলবুল ওরফে সোহাগ (৩২), ইছাবা সদস্য মাসুদ রানা (৩১), ইছাবা সদস্য আতিকুর রহমান ওরফে সৈকত (৩৩) ও ইছাবা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে দজির্ মিজান (৩৫)। এদের প্রত্যেকেরই কয়েকটি করে ছদ্ম নাম রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা উত্তরাঞ্চলের কোনো জেলায় টাগের্ট কিলিংসহ বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য পুলিশ আদালতে আবেদন করেছে।
বুধবার বগুড়া পুলিশ সুপার কাযার্লয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হেডকোয়াটাের্সর্র ইন্টেলিজেন্স শাখা ও বগুড়া ডিবি পুলিশ যৌথভাবে রাত দেড়টার দিকে অভিযান চালিয়ে মিজার্পুর-রানীরহাট মোড় থেকে জঙ্গিদের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের নিকট ম্যাগাজিনসহ ২টি বিদেশি পিস্তল, ১০ রাউন্ড গুলি, ৩টি বামির্জ চাকু ও এক জোড়া হ্যান্ডকাপ পাওয়া যায়। এরা অনেক সময় পুলিশের পরিচয় দিতো বলে সূত্র জানায়। গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি জামালপুর ও রাজশাহী জেলায়। এর মধ্যে ৪ জন গত বছরে রাজশাহীর মতিহার থানার একটি জুট মিল থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা ডাকাতি মামলার আসামি। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানায়, দু’দিন আগে পুরাতন জেএমবি’র প্রধান সমন্বয়ক ও শুরা সদস্য খোরশেদ আলম ওরফে মাস্টার তাদের গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকার মাওনায় যেতে বলে। সেখানে খোরশেদ আলম মাস্টার,শুরা সদস্য হাসান আলী ও সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া ৫ জঙ্গীর বৈঠক হয়। প্রধান সমন্বক শুরা সদস্য ও শীষর্ জঙ্গিদের ওই বৈঠকে কাযর্ক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা সহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনাসহ সামরিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৫ জঙ্গিকে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। গাজীপুর থেকে নীতি নিধার্রণী বৈঠকে পাওয়া নিদের্শনা নিয়ে ৫ জঙ্গি সম্ভবত বাসে বগুড়ার শেরপুরের মীজার্পুর এলাকায় নামে বলে পুলিশের। এখান থেকে তাদের কোনো নিদির্ষ্ট আস্তানায় কোনো বাহনে চেপে যাওয়ার কথা ছিল বলে পুলিশের ধারণা। এর মাঝে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্র আরো জানায়, গ্রেফতারকৃতরা যে কোন নাশকতা বা কিলিং মিশনের পরিকল্পনা নিয়েছিল সেটা অনেকটাই পরিষ্কার। আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চন উপলক্ষে কোন নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কিনা সেটাও তদন্তে থাকছে বলে পুলিশ সুপার এক প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের জানান। তবে গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করার আগে জঙ্গিদের পরিকল্পনার বিষয়ে সুনিদির্ষ্টভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূণর্ তথ্য পাওয়ার আশা করছে পুলিশ। অস্ত্রসহ জঙ্গিদের গ্রেফতারের বিষয়ে আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।