শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
২৭৫ মেগাওয়াটের ইউনিট চালু

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু

কয়েক দিনের কয়লা মজুত হওয়ায় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরু করেছে। কয়লা সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে বাকি দুটি ইউনিটও চালু করা হবে
ফুলবাড়ী সংবাদদাতা
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

৫২ দিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে।

গত ২২ জুলাই কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় দেশের একমাত্র কয়লাভিক্তিক বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট। এতে বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে দিনাজপুরসহ রংপুর বিভাগের আট জেলা।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ম্যানেজার (উৎপাদন) প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির স্টিমে আগুন দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে রাত ১০টার মধ্যে যে কোনো সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি. (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কতৃর্পক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায় গত ২২ জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাধ্য হয়ে বন্ধ করতে হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হয়। কয়েক দিনের কয়লা মজুত হওয়ায় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ২৭৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। কয়লা সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে ১২৫ মেগাওয়াট করে ২৫০ মেগাওয়াটের বাকি দুটি ইউনিটও চালু করা হবে।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলন করা কয়লার মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা গায়েব হয়ে যায়। এ কারণে গত ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মদ ও কোম্পানির সচিব (জিএম প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে প্রত্যাহার করে নেয় খনিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। একই কারণে মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং অ্যান্ড অপারেশন) এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টার) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। যদিও খনির কমর্কতাের্দর দাবি এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা গায়েব নয়, সিস্টেম লস। তাদের দাবি গত ২০০৭ সাল থেকে খনিটিতে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। এই পযর্ন্ত খনি থেকে এক কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস হয়েছে।

সে কারণে কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কতৃর্পক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায় কয়লার অভাবে গত ২২ জুলাই বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ করা হয়। বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে দিনাজপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের আট জেলা।

বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নদার্ন ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লি. (নেসকো) এর রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। এর মধ্যে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপবিদুৎ কেন্দ্র থেকে। কিন্তু কয়লা সংকটের কারণে ৫২ দিন থেকে বড়পুকুরিয়া তাপবিদুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বাহির থেকে বিদ্যুৎ এনে এই আট জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন পুরোপুরি শুরু হলে বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।

এদিকে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন রেজিস্টার সূত্রে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৫২৫ মেগাওয়াটের হলেও সেখানে কোনো দিন ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। গত ২০১৭ সালের সবোর্চ্চ উৎপাদন হয়েছে ৩৯৭ মেগাওয়াট।

তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কমর্রত একাধিক কমর্কতার্ নাম প্রকাশ না করার শতের্ জানান, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিটে প্রতিদিন (জ্বালানি) কয়লার প্রয়োজন হয় পঁাচ হাজার ২০০ টন। কিন্তু কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে প্রতিদিন কয়লা উৎপাদন হয় তিন হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার টন। ফলে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে প্রতিদিন এক হাজার ৭০০ টন কয়লা ঘাটতি থাকে। সে কারণে প্রতিদিন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি করে ইউনিট বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির যন্ত্রাংশের মেয়াদ কমে যাওয়ায় আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না। তাই ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলেও ৩০০ থেকে ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<12412 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1