বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা ও চট্টগ্রামে নেশার পাতা ‘খাট’ উদ্ধার

যাযাদি রিপোটর্
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ঢাকার উত্তরার একটি বাড়ি থেকে প্রায় ৩৩০ কেজি ইথিওপীয় নেশার পাতা ‘খাত’ উদ্ধার করেছে পুলিশ

বুধবার উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের এ অভিযানে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এরা হলেন- মো. নাজমুল ইসলাম তালুকদার (৩৯) ও মো. মাহবুবুর রহমান পলাশ (৫১)।

তাদের মধ্যে নাজমুলের বাড়ি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার ঠাকুরজ্যাকান্দি গ্রামে এবং মাহবুবুর রহমানের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী থানার শেরশাহ রোডে। তারা দুজনেই উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন।

ডিএমপি নিউজ বলছে, ইথিওপিয়া থেকে আমদানি করা নেশাদ্রব্যগুলো উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ওই বাড়িতে মজুদ করা হয়েছিল বিভিন্ন দেশে চড়া দামে পাচার করার জন্য। এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ধরনের নেশাদ্রব্য বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়েছিল গত ৩১ আগস্ট। সেদিন শাহজালাল আন্তজাির্তক বিমানবন্দরের কাগোর্ গুদাম এবং শান্তিনগরের এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে

৮০০ কেজি নেশাদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

এরপর আরও কয়েক দফায় বিভিন্ন পরিমাণ ‘খাত’ উদ্ধার করার খবর দিয়েছে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কমর্কতার্রা বলছেন, কাথ শ্রেণিভুক্ত এক ধরনের উদ্ভিদ থেকে তৈরি এই নেশাদ্রব্য আফ্রিকার দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই প্রচলিত। তবে ইদানীং বিভিন্ন দেশে হেরোইন বা ইয়াবার মতো মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ভেষজ নেশার পাতা।

চায়ের পাতার মতো দেখতে শুকনো ওই নেশাদ্রব্য মুখে নিয়ে চিবিয়ে বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। ওই পাতায় ক্যাথিনোন ও ক্যাথিন অ্যালকালয়েড থাকে বলে ইয়াবার মতই নেশা হয়।

এ ধরনের বিকল্প নেশাদ্রব্যগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে ‘নিউ সাইকোট্রফিক সাবটেনসেস’ বা এনপিএস নামে।

চট্টগ্রামেও ‘খাত’ আটক

এদিকে বৈদেশিক ডাক বিভাগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও ফেনীর ঠিকানায় আসা দুইটি পাসের্ল পরীক্ষা করে ২০৮ কেজি ভয়ানক মাদক ‘খাত’ উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কতৃর্পক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির কমর্কতার্রা জানিয়েছেন, এসব মাদক ‘গ্রিন টি’ বা সবুজ চা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান ।

তিনি বলেন, ‘ইথিওপিয়া থেকে জিয়াদ মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের হালিশহরের মো. ইফতেখার হোসেনের নামে এক ব্যক্তির ঠিকানায় একটি পাসেের্ল মোট ১৩টি কাটর্ন পাঠান। আরেকটির প্রাপক হিসেবে নাম আছে ফেনির আরিফ এন্টারপ্রাইজের। এই ঠিকানায় তিনটি কাটের্ন ৪৮ কেজি পণ্য আসার কথা ছিল। বৈদেশিক ডাক বিভাগের মাধ্যমে পাঠানো এসব পাসেের্লর ‘তথ্য হিসেবে’ জানানো হয় গ্রিন টি বা সবুজ চা’র কথা। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, ওইসব কাটের্ন গ্রিন টি নয় বরং এসেছে নতুন ধরনের মাদক ‘খাত’।’

কাস্টমস কমিশনার আরও জানান, ঢাকা পোস্ট অফিস হয়ে গত ৩০ আগস্ট এই চালান দুটি চট্টগ্রামে পৌঁছায়। এসময় চট্টগ্রাম কাস্টমস খবর পায়, ডাক বিভাগের মাধ্যমে খাতের চালান এসেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর পাসের্ল দুটি আটক করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষা করে জানা যায়, এগুলো গ্রিন টি নয় বরং ভয়ানক মাদক ‘খাত’।

তিনি জানান, তদন্তে দেখা গেছে, যেসব ঠিকানা ব্যবহার করে এই কাটর্নগুলো পাঠানো হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়। ভুয়া নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, নতুন নেশাদ্রব্য ‘খাত’ বা ‘মিরা’ নামে এই উদ্ভিদটি নিউ সাইকোট্রফিক সাবস্টেন্সেস (এনপিএস) নামে পরিচিত। অনেকে একে ‘আরবের চা’ বলে থাকেন। ‘ইথিওপিয়ান গঁাজা’ নামেও পরিচিত এটি। আন্তজাির্তকভাবে ‘সি’ ক্যাটাগরির মাদক হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘খাত’ মূলত পূবর্ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে সোমালিয়া ও ইথিওপিয়াতে উৎপন্ন হয়। সেখান থেকে রফতানি হয় ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অস্ট্রেলিয়ায়। সম্প্রতি ঢাকায় এনপিএসের কয়েকটি চালান জব্দ করে শুল্ক বিভাগ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<13630 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1