জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রোহিঙ্গা ‘গণহত্যার’ জন্য মিয়ানমারের শীষর্ সেনা কমর্কতাের্দর বিচারের সুপারিশ করার এক সপ্তাহের মাথায় দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, তার দেশের সাবের্ভৗমত্বে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কোনো দেশ, সংস্থা বা গোষ্ঠীর নেই।
মিয়ানমারে গণতন্ত্র বিকাশের পথ তৈরি করতে ‘সশস্ত্র সংঘাত থামিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার’ কাজ সেনাবাহিনী চালিয়ে যাবে এবং রাখাইনের ঘটনা নিয়ে ‘অগ্রহণযোগ্য কোনো দাবি’ সেনাবাহিনী মেনে নেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূণার্ঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ এবং আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রাখাইনের ঘটনা নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরুর পর এই প্রথম জেনারেল মিন অং হ্লাইং প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কথা বললেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা মায়াবতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার নেপিদোতে সেনাবাহিনীর এক অনুষ্ঠানে গণতন্ত্র, জাতিসংঘ ও রাখাইন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেন, বিশ্বের একেক দেশের গণতন্ত্র চচার্র ধরন একেক রকম। একটি দেশ সেই ধরনের গণতন্ত্রের চচার্ করে, যা তার জন্য উপযুক্ত। সাবের্ভৗম রাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমারও স্বাধীন একটি পররাষ্ট্র নীতির চচার্ করে এবং আন্তজাির্তক সম্পকের্র ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ একটি অবস্থান বজায় রেখে চলে।
‘তাছাড়া জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমার জাতিসংঘের যে সব চুক্তিতে সই করেছে, সেগুলো প্রতিপালন করে। প্রতিটি দেশ যেহেতু নিজের মতো করে আলাদা মানদÐ ও আদশর্ নিধার্রণ করে, সেহেতু তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার বা তাদের সাবের্ভৗমত্ব লঙ্ঘন করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার কোনো দেশ, কোনো সংস্থা বা কোনো গোষ্ঠীর নেই।’
অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলতে গেলে যেমন ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, একইভাবে কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রেও একই ফল হতে পারে বলে সতকর্ করেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইনে সেনাবাহিনীর যে অভিযানের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, সেই অভিযানকে ‘জাতিগত নিমূর্ল অভিযান’ হিসেবে বণর্না করে আসছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তজাির্তক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, রাখাইনে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, আর যেভাবে তা ঘটানো হয়েছে, মাত্রা, ধরন এবং বিস্তৃতির দিক দিয়ে তা ‘গণহত্যার অভিপ্রায়কে’ অন্য কিছু হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টার সমতুল্য।