বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে নাইকো দুনীির্ত মামলার শুনানিতে আদালতে হাজির করার বিষয়ে দলের মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে সরকার জোর করে ও বেআইনিভাবে হাসপাতাল থেকে আদালতে নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে নাইকো মামলার অভিযোগ গঠনের আংশিক শুনানি হওয়ার পর বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ফখরুল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মামলার আসামি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ আইনজীবীরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে জোর করে ও বেআইনিভাবে হাসপাতাল থেকে আদালতে নেয়া হয়েছে। মেডিকেল বোডর্ বলেছে, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। আর মেডিকেল বোডর্ তাকে হাসপাতাল থেকে ডিসচাজর্ সাটিির্ফকেট (ছাড়পত্র) দিয়েছে বলে আমাদের জানা নেই, অন্য কাউকে দিয়ে ছাড়পত্র তৈরি করেছে সরকার। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এ কাজ করেছে। এর তীব্র নিন্দা জানাই।
ফখরুল অসুস্থ খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও তার মুক্তির জোর দাবি জানান।
চিকিৎসকের অনুমোদন ছাড়াই খালেদা কারাগারে
পুরোপুরি সুস্থতা নিশ্চিত না করে মেডিকেল বোডের্র প্রধানের অনুমোদন ছাড়াই খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি সমথর্ক চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব জাহিদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোডের্র প্রধান অধ্যাপক জলিলুর রহমান চৌধুরী এই মুহূতের্ দেশের বাইরে। বোডের্র আরেকজন সদস্য ডা. বদরুন্নেসাও দেশের বাইরে।
‘অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক চৌধুরী, যার অধীনে বেগম খালেদা জিয়া ভতির্, তিনি গতকালই বিদেশ থেকে ফিরেছেন। তার সাথে কোনো পরামশর্ না করেই তার ডিপাটের্মন্টের অধীনে ভতির্ থাকা অবস্থায় কারো সাথে পরামশর্ না করেই হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ এবং সুনিদির্ষ্টভাবে সরকারের ইচ্ছায় কারা কতৃর্পক্ষ বেগম খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ থেকে নিয়ে গেছে।’
বিএনপির এই চিকিৎসক নেতা আরো বলেন, ‘বোডের্র চিকিৎসকদের ভাষ্য, উনার ব্যথা আগের থেকে বেড়েছে। আর হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ বলছেন, উনার অবস্থা স্থিতিশীল। যেসব মেশিনারি দিয়ে উনাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হতো সেটা একটা সুপারভাইসড স্পেশালাইজড সেন্টারে দেয়া হতো। তা কীভাবে কারাগারে দেয়া হবে আমাদের বোধগম্য নয়।’
আদালত অবমাননা
হয়েছে: জয়নুল
এদিকে হাইকোটের্র নিদের্শনার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার পর আদালতকে অবহিত না করেই তাকে পুনরায় কারাগারে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনায় আদালত অবমাননা হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোটর্ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে পুরাতন কারাগারে স্থানান্তরের পর বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোটর্ আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জয়নুল আবেদীন এ দাবি তোলেন।
সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জয়নুল আরও বলেন, ‘বিনা চিকিৎসায় সরকার খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলতে চাইছে। এতে আমাদের আইনজীবীদের এবং দেশের সাধারণ মানুষের মনে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় সংসদ নিবার্চন সুষ্ঠু হবে কি না বা আদৌ নিবার্চন হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।’
আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তাফা, ট্রেজারার নাসরিন আখতার, সহসম্পাদক কাজী জয়নাল আবেদীন, অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ, মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার শফিউল মাহমুদ, ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান, সালাউদ্দিন, মো. টিপু সুলতান, আনিসুর রহমান রায়হানসহ বিএনপি সমথির্ত আইনজীবীরা।