বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
অভিভাবকদের ক্ষোভ-হতাশা

রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভতিের্ত বাড়তি অথর্ আদায়

ভতির্ নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভতির্র ক্ষেত্রে পঁাচ হাজার এবং আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিও বহিভূর্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানে ভতির্র সময় বাংলা মাধ্যমে আট হাজার এবং ইংরেজি মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নিতে পারবে
যাযাদি রিপোটর্
  ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ঢাকা মহানগরের নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাথীর্ ভতির্র নীতিমালা না মেনে নিজেদের ইচ্ছামতো ফি আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপায়ান্তর না দেখে বাধ্য হয়ে বাড়তি অথর্ পরিশোধ করে সন্তানকে ভতির্ করছেন অভিভাবকরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেড়েছে, তাই বাধ্য হয়ে বাড়তি অথর্ নেয়া হচ্ছে, এটা অন্যায় কিছু নয় বলে মনে করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কতৃর্পক্ষ।

গত নভেম্বর মাস থেকে দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাথীর্ ভতির্র কাযর্ক্রম শুরু হয়। লটারি ও ভতির্ পরীক্ষার পবর্ শেষে শুরু হয় ভতির্ কাযর্ক্রম। অভিযোগ উঠেছে, সরকারের নিধাির্রত অথের্র বেশি আদায় করে ঢাকার অনেক নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাথীর্ ভতির্ করানো হচ্ছে।

মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমÐির জুনিয়র ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, স্ট্যামফোডর্ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাড্ডার আলাতুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরেজমিন ঘুরে অতিরিক্ত ভতির্ ফি বাবদ অথর্ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

একাধিক অভিভাবক বলেন, ধানমÐির নন-এমপিওভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্ট্যামফোডর্ স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্লে থেকে কেজি শ্রেণিতে বেতন তিন হাজার টাকাসহ ভতির্ ফি নেয়া হচ্ছে মোট ২৮ হাজার টাকা। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পযর্ন্ত বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে বেতনসহ ভতির্ ফি ৩০ থেকে ৩৩ হাজার টাকা পযর্ন্ত নেয়া হচ্ছে। আবার পুনঃভতির্র ক্ষেত্রেও সমান অথর্ নেয়া হচ্ছে।

ধানমÐির জুনিয়র ল্যাবরেটরি হাইস্কুলেও দেখা যায় একই চিত্র। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের চিত্রও একই রকম। সরকারের দেয়া নীতিমালা অনুসরণ না করে সেখানেও ‘গলাকাটা’ ভতির্ ফি নেয়া হচ্ছে। স্কুলটির কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, এখানে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পযর্ন্ত ভতির্ ফি নেয়া হচ্ছে আট হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পযর্ন্ত। এছাড়া শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণির জন্য উন্নয়ন ফি বাবদ বাড়তি ২৫ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। অন্যান্য শ্রেণিতে ফি নেয়া হচ্ছে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পযর্ন্ত।

জানতে চাইলে স্কুলটির অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘স্কুলের বিভিন্ন খাতে অনেক ব্যয়। কমিটির সিদ্ধান্তে আমরা ভতির্ ফি নিধার্রণ করেছি।’

একইভাবে বাড্ডার এমপিওভুক্ত স্কুল আলাতুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পযর্ন্ত ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ শামসুল আলম বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেশি। ফি তো একটু বেশি নিতেই হয়, না হলে চলব কীভাবে?’

বেশ কয়েকজন অভিভাবক বাড়তি ফি নেয়ার বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার অনেক কিছু বিবেচনা করেই ভতির্ ফি নিধার্রণ করেছে। এরপরও এসব প্রতিষ্ঠান গলাকাটা ফি আদায় করছে। আমরাও নিরুপায়। আমাদের বাচ্চাদের তো বাধ্য হয়েই ভতির্ করাতে হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া যাতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিধাির্রত ফি’র বাড়তি অথর্ আদায় করতে না পারে- যোগ করেন তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সবের্শষ ভতির্ নীতিমালা- ২০১৮ তে বলা আছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাথীর্ ভতির্র ক্ষেত্রে পঁাচ হাজার টাকার অতিরিক্ত অথর্ আদায় করতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিও বহিভূর্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষাথীর্ ভতির্র সময় মাসিক বেতন, সেশন চাজর্ ও উন্নয়ন ফি’সহ বাংলা মাধ্যমে সবোর্চ্চ আট হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করতে পারবে।

এ বিষয়ে মাউশি’র মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক সরকার আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কেউ যাতে শিক্ষাথীর্-অভিভাবকদের কাছ থেকে বাড়তি অথর্ আদায় করতে না পারে সে জন্য আমাদের ১১টি টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। বাড়তি ফি নিয়ে কেউ পার পাবেন না। সবাইকে বাড়তি ফি ফেরত দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে আমাদের টিমের সদস্যরা নানা কৌশলে সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মাউশিতে প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে। এরপর আমাদের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে কারণ জানতে চাওয়া হয় এবং বাড়তি অথর্ ফেরতে দেয়ার নিদের্শনা দেয়া হয়। বাড়তি অথর্ ফেরত দেয়া হলেও সন্তোষজনক কোনো জবাব পাওয়া না গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<31674 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1