বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
লতিফ সিদ্দিকী

বগুড়ার আদমদীঘিতে অবৈধভাবে সরকারি জমি বিক্রি করে প্রায় ৪১ লাখ টাকা ক্ষতি করায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। অপরজন হলেন জমির ক্রেতা জাহানারা রশিদ। সোমবার সকালে বগুড়া সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বগুড়ার বিচারিক আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

'কয়েক কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি ২৪ লাখে বিক্রি!' শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে ২০১২ সালের ২৭ মে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষাপটে দুদক তদন্ত শুরু করে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আদমদীঘিতে বিলুপ্ত একটি পাট ক্রয়কেন্দ্রের (রানীনগর পাট ক্রয়কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত) সম্পত্তি দরপত্র ছাড়াই গোপনে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়া হয়। পাট ক্রয়কেন্দ্রের প্রায় আড়াই একর জমিসহ স্থাপনা ও যন্ত্রপাতির বর্তমান বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু সরকারি ওই সম্পত্তি ২৪ লাখ টাকায় বগুড়া শহরের জাহানারা রশিদের কাছে বিক্রি করা হয়। আদমদীঘি ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘির দরিয়াপুর মৌজার ২ দশমিক ৩৮ একর জমির ওপর কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। এটি নওগাঁর রানীনগর উপজেলা সদরের পাশে অবস্থিত। কয়েক বছর ধরে ওই কেন্দ্রে পাট কেনা বন্ধ আছে। ওই জমির ওপর ছয় হাজার ৯৫৪ বর্গফুটের তিনটি টিনের গুদামঘর আছে। রয়েছে ১ হাজার ২০০ বর্গফুটের বারান্দা, ১ হাজার ৫৫০ বর্গফুটের ইটের তৈরি একটি দালান, হস্তচালিত একটি জুটপ্রেসার, চেয়ার, লোহার সিন্দুকসহ নানা ধরনের আসবাব ও শতাধিক মূল্যবান গাছ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকারি সম্পত্তি বিক্রির এ আদেশের বিরুদ্ধে রানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দীন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইসমাইল হোসেন ২০১১ সালের ১৩ মে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটকারী ইসমাইল হোসেন জানান, রিট গ্রহণ করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। পাশাপাশি বিক্রির ওই আদেশের সব কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। অন্যদিকে, ওই বছরের ১২ মে বিকেলে ক্রেতার লোকজন পাটকেন্দ্রের অবকাঠামো ভেঙে মালামাল নিতে গেলে এলাকাবাসী বাধা দেন। বাধার মুখে ক্রেতার লোকজন ফিরে যেতে বাধ্য হন।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই তদন্তকাজ শুরু হয়। সরকারি এই জমি ইজারা নেয়ার জন্য ২০১০ সালের ১১ মে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন জাহানারা রশিদ। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের আওতায় সরকারি জমি ইজারা দেয়া হয়। কিন্তু তিনি ইজারার টাকা পরিশোধ করেননি। মন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ার কারণে জাহানারা জমি দখলে নিয়েছিলেন। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ওই জমি ক্রয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি সম্পত্তি বিক্রয়ের নীতিমালা ভঙ্গ করে উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়াই বিক্রি করেন। সরকারি মূল্যের ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা মূল্যের জমি বিক্রি করা হয় মাত্র ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৪ টাকায়। তৎকালীন মন্ত্রী এসব করেছেন একক ক্ষমতাবলে। নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে তিনি সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা ক্ষতি করেছেন। এতে দন্ডবিধির ৪২০/১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তদন্তে এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বিলুপ্ত বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের (বিজেসি) প্রায় ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের জমি লতিফ সিদ্দিকী ও জাহানারা রশিদ পরস্পর যোগসাজশে কেনাবেচা করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছেন। তদন্তে এর প্রমাণ মিলেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<37386 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1