মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাসে রুমাল কিনলেই অজ্ঞান!

ছিনতাইকারী চক্রের ৭ সদস্য আটক
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
শনিবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ৭ সদস্যকে আটক করের্ যাব। ছবিটি রোববারর্ যাবের মিডিয়া সেন্টার থেকে তোলা -যাযাদি

বাসে রুমাল কিনে ব্যবহার করে অজ্ঞান হওয়া বেশ কয়েকজন যাত্রী সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসব ঘটনার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ের্ যাব জানতে পারে রুমাল কিনে ব্যবহার করলেই অজ্ঞান হবার নেপথ্যের তথ্য। সুকৌশলে বিক্রেতা সেজে যাত্রীদের কাছে চেতনানাশক ওষুধ স্প্রে করা রুমাল বিক্রি করে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করে আসছিল একটি চক্র। আর বাধার মুখে পড়লেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করত ক্ষুর-বেস্নড।

শনিবার রাতে গাজীপুর জেলার টঙ্গী এলাকা থেকে এই অভিনব সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের ৭ সদস্যকে আটকের পর এমন অভিনব কায়দায় যাত্রীদের মালামাল সর্বস্ব লুট ও ছিনতাইয়ের তথ্য জানিয়েছের্ যাব-১।

র্

যাব বলছে, রাজধানীর ঢাকা-ময়মনসিংহ, আব্দুলস্নাহপুর-আশুলিয়া, টঙ্গী-কালীগঞ্জ রুটে এবং গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বাসে যাত্রীদের কাছে এই চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহৃত রুমাল বিক্রির অপতৎপরতা বেশি।

রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের্ যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায়র্ যাব-১-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টঙ্গীর আব্দুলস্নাহপুর এলাকায় অভিযানে গিয়ে মো. রাকিব ওরফে সুমন (২২), নাঈম ইসলাম (২২), মো. আজাদ (২৮), সাইফুল ইসলাম (২৮), ইমরুল হোসেন (১৮), সাগর শেখ (২০), আরাফাত হোসেন (১৯) নামে অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সাত সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ধারালো ক্ষুর, ছোড়া, ১০টি বেস্নড, চেতনানাশক মলম উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতের্ যাব-১ এর সিও বলেন, আটকরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ, আব্দুলস্নাহপুর-আশুলিয়া, টঙ্গী-কালীগঞ্জ রুটে এবং গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বাসে যাতায়াতকারী যাত্রীদের কাছে চেতনানাশক ওষুধমিশ্রিত রুমাল বিক্রি ও অজ্ঞান করে সবর্স্ব লুট করে আসছিল।

চক্রের এক সদস্য প্রথমে টার্গেটকৃত ব্যক্তির পাশের সিটে বসেন। এরপর আরেকজন বিক্রেতা সেজে একই বাসে রুমাল নিয়ে টার্গেটেড যাত্রীর কাছে যান। কৌশলে আগে থেকে চেতনানাশক স্প্রে মেশানো রুমাল বের করে বসে থাকা যাত্রীর নাকের কাছে ধরেন। যাত্রীর পাশে বসা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য রুমালের দরদাম করতে করতে ওই যাত্রীর নাকের কাছে ধরে রাখেন। ২-১০ মিনিটের মধ্যে টার্গেটকৃত যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সিটে বসে থাকা চক্রের সদস্য তখন তাকে এমনভাবে বসিয়ে

রাখেন যাতে সবাই মনে করে অজ্ঞান নয় ঘুমিয়ে পড়েছেন ওই যাত্রী। এরপর নিরাপদ দূরত্বে রুমালবিক্রেতা বাস থেকে নেমে যান এবং চক্রের অপর সদস্যও সর্বস্ব লুট করে নেমে যান।

চক্রটি রুমাল ছাড়াও একই কায়দায় শসা, বড়ই, আচার ও কোমলপানীয় বিক্রির কৌশল নিয়ে চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহার করে যাত্রীদের অজ্ঞান করে মোবাইল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রীসহ সর্বস্ব লুট করে আসছিল।

র্

যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ভয়ঙ্কয় চক্রটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন চেতনানাশক স্প্রে প্রয়োগের ফলে ভুক্তভোগী ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় অজ্ঞান হয়ে থাকেন, অনেকক্ষেত্রে মারাও যান।

চক্রটি মোবাইলে কথা বলা অবস্থায় রাস্তায় জ্যামে আটকে পরা গাড়ির আরোহী ও সাধারণ পথচারীদেরও টার্গেট করে থাকে। পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেয় এবং বাস ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীর পকেট কেটে টাকা-পয়সা ও মোবাইল নিয়ে দ্রম্নত সটকে পড়ে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, চক্রের প্রতিটি সদস্য মাদকাসক্ত। তারা হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত। এই চক্রের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও ছিনতাই মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় কারাভোগ করেছেন। চক্রের মূল হোতা মো. রাকিব প্রায় ৮-৯ বছর ধরে চুরি, ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির সঙ্গে জড়িত। পুরো চক্রটিকে তিনি পরিচালনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<42528 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1