শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজারে আমের দাম বাড়ায় কমেছে বিক্রি

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ জুন ২০১৯, ০০:০০
ক্রেতার অপেক্ষায় আম বিক্রেতারা

'মধুমাস' জ্যৈষ্ঠ পেরিয়ে আষাঢ়ের আগমনের সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি ফলের আড়ৎ বাদামতলীতে মৌসুমী রসালো ফলের মৌ-মৌ ঘ্রাণ এখনো আগের মতোই আছে। তবে চলতি সপ্তাহে আমের দাম কমার বদলে উল্টো কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় সেই ঘ্রাণের টানে ক্রেতা ভিড়তে পারছেন খুব যৎসামান্যই!

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি বছর আম উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ অঞ্চল রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুরসহ অন্যসব এলাকায় আমের উৎপাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হয়েছে। চলতি বছর আম বাগানগুলোতে অন্য বছরের চেয়ে বেশি ঝড়ের আঘাত ও শিলাবৃষ্টি সইতে হয়েছে। এছাড়া পরবর্তীতে বাগানগুলোতে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ থেকেও অনেকাংশে বিরত ছিলেন স্থানীয়রা। এসব কারণেও অনেক বেশি আম নষ্ট এবং ফলন কম হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

এরই প্রভাবে ভরা মৌসুমে আমের দাম কমার বদলে উল্টো বাড়তে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে আমের প্রকারভেদে প্রতি কেজি আম ৩ থেকে ১০ টাকা করে দাম বেড়েছে এই পাইকারি বাজারেই। এর প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারেনি খুচরা বাজারও। ফলে সেখানে এর দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১৫ বা ২০ টাকা। তবে আগামী দিনগুলোতে এই অবস্থার উন্নতি নাকি অবনতি ঘটবে তা এখনই 'ঠাওর' করতে পারছেন না এখানকার আড়ৎদার বা ব্যবসায়ীরা।

গত রোববার সকাল ৯টার দিকে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বরাবরের মতোই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমের স্বাভাবিক সরবরাহ বিদ্যমান রয়েছে। আড়ৎগুলোর সামনেই পস্নাস্টিকের খাঁচায় পসরা সাজিয়ে বসেছেন আড়ৎদার ও কর্মচারীরা।

প্রতিটি দোকানে আলাদা আলাদা ২ থেকে ৩ জাতের আম রাখা হয়েছে। বড় বড় আড়ৎ থেকে আম কিনে কিছুটা বাড়তি দামের আশায় সমান পসরা সাজিয়ে বসেছেন অন্য ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে অন্য সব হিসাব-নিকাশ সমান তালে চললেও কেনাবেচার হিসাবে বেশ গরমিল লক্ষ্য করা গেছে। বাজারে অন্য সময়ের তুলনায় সে ধরনের বিক্রি চোখে পড়েনি।

বাজারে মৌসুমী ফল আমের ভিড়ে অন্যান্য ফল খুব একটা চোখে না পড়লেও অল্প অল্প পরিমাণে রয়েছে বিভিন্ন মৌসুমী ফলের যোগান ও বিক্রি। বাজারে এ মুহূর্তে যেসব আম রয়েছে সেগুলো আকার-আকৃতি ও মিষ্টতার ভিত্তিতে একেক দামে বিক্রি চলছে। এর মধ্যে ল্যাংড়া প্রতিকেজি পাইকারি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, খিরসাপাত প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় চলছে বিক্রি, লক্ষণভোগ প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, আম্রপলি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও বাজারে অল্প পরিমাণে আসা ফজলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। তবে এর বাইরেও উত্তরাঞ্চলের স্থানীয় কিছু জাতের আম বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এছাড়া আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে আশ্বিনী জাতের আম কিছু কিছু বাজারে আসতে পারে।

বাজারে আগত ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহ থেকে এ সপ্তাহে বাজারে ক্ষেত্রভেদে ২ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে বিভিন্ন জাতের আমের। ফলে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়ছে আর বিক্রি কমেছে খুচরা বাজারেও। ফলে আগে নির্ধারিত আড়ৎ থেকে এসেই আম কিনে নিয়ে গেলেও এখন কিছুটা ঘুরে সুবিধাজনক দামে অল্প পরিমাণে আম সংগ্রহ করছেন তারা।

আমের দাম বৃদ্ধি ও বিক্রি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রিয়া পাইকারি ফল আড়তের মালিক আমজাদ হোসাইন বলেন, এখন আমের পূর্ণ সিজন, এর পরেও আমের দাম কিছুটা উপরের দিকে। তবে এটা অস্বাভাবিক নয়। এজন্য আমের বিক্রি কমেছে এমনটাও না। ইদানীং দেখা যায় অনেকেই রাজশাহী থেকে মণ ওজনে আম আনিয়ে নেন ফ্রেশ পাওয়ার আশায়। যিনি এক-দেড় মণ আম একবার আনেন তিনি স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা থেকে খুব বেশি আম কিনবেন না। এটা একটি কারণ আবার আমের ফলন ও উৎপাদন কম হওয়া দাম বৃদ্ধি আরেকটা কারণ। তবে তিনি মনে করেন আমের দাম এবার সাধারণ মানুষের হাতের নাগালেই রয়েছে।

বাদামতলী বাজারের অপর এক ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, 'বাজার ঘুরে দেখলেই বুঝবেন বাজারে অনেক আম রয়েছে। যোগানও বেশ ভালো। কিন্তু আমের দাম বাড়ার কারণে বিক্রি বেশ কমেছে। তবে কোরবানির ঈদের আগ পর্যন্ত আমের এই যোগান স্বাভাবিক থাকবে। আমের দাম আশা করি আগামী সপ্তাহ বা পরের সপ্তাহে কিছুটা নিম্নগামী হলেও হতে পারে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<55215 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1