চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েক হাজার অবৈধ ব্যাটারি রিকশা। একই সঙ্গে রয়েছে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, নসিমনসহ তিন চাকার ছোট যানবাহন। মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ হলেও 'স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা' ও পুলিশকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব যানবাহন। এসব যানবাহনের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া থেকে কর্ণফুলী মইজ্জারটেক পর্যন্ত মহাসড়কে এসব যানবাহনের দৌরাত্ম্য দেখা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় থানা পুলিশের কাছ থেকে টোকেন নিয়ে মহাসড়কে চলছে এসব যানবাহন। সরেজমিন এসব যানবাহনের টোকেন বাণিজ্যের প্রমাণও পাওয়া যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি রিকশা চালক বলেন, পুলিশকে টাকা দিয়ে তারা সড়কে গাড়ি চালানোর অনুমতি নিয়েছেন। প্রতিমাসে এসব টোকেন সংগ্রহ করতে হয় বিভিন্ন মালিক সমিতি ও সংগঠনের নামে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বাসচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ব্যাটারি রিকশা, সিএনজি অটোরিকশার জন্য সড়কে গাড়ি চালানো কঠিন। এসব গাড়ির চালকের কোনো কান্ডজ্ঞান নেই। সড়কের যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। হঠাৎ করেই ইউটার্ন নিয়ে বসে। এসব কারণে দুর্ঘটনা বেশি হয়। মো. নুরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা বারবার বলার পরেও মহাসড়কে ব্যাটারি রিকশা, প্যাডেল রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, নসিমনসহ তিন চাকার ছোট যানবাহন চলছে। হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় থানা পুলিশকে টাকা দিয়ে এসব গাড়ি সড়কে চলছে।' জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে ব্যাটারি রিকশা, প্যাডেল রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, নসিমনসহ তিন চাকার ছোট যানবাহন চলাচল না করার নির্দেশনা রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ব্যাটারি রিকশা, প্যাডেল রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে না বলে দাবি করেন সহকারী পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অসংখ্য ব্যাটারি রিকশা, প্যাডেল রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায় এমনটা জানালে তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। দোহাজারী হাইওয়ে থানার ইনচার্জ আহসান হাবিব বলেন, মহাসড়কে কিছু কিছু তিন চাকার যানবাহন চলাচল করে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। গাড়িগুলো আটক করে জব্দ করি। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) মীর নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান চালাই। মামলা দিই, গাড়ি আটক করি। তবুও মহাসড়কে ব্যাটারি রিকশা, প্যাডেল রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। টোকেন বাণিজ্যের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেন মীর নজরুল ইসলাম।