শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাহালম কান্ড: দুদকের ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

যাযাদি ডেস্ক
  ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
জাহালম

পাটকল শ্রমিক জাহালমকে আসামি করে ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলার ১১ তদন্ত কর্মকর্তার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। যাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

কী কারণে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে তা ২৮ আগস্ট জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার এ আদেশ দেন বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।

গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কান্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চেয়েছিলেন আদালত। সে অনুসারে দুদকের পরিচালক (লিগ্যাল) এবং এ সংক্রান্ত দুদকের তদন্ত কমিটির প্রধান আবুল হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদের দেয়া প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

আবুল হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদ প্রতিবেদনে বলেন, 'সার্বিক বিবেচনায় আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, জাহালমকে আবু সালেকরূপে চিহ্নিত করার যে ভুলটি হয়েছে তা দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কারণেই ঘটেছে। আর তাদের ভুল পথে চালিত করতে সহায়তা করেছে ব্র্যাক ব্যাংক ও অন্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা এবং অ্যাকাউন্টের ভুয়া ব্যক্তিকে পরিচয়দানকারীরা। তবে সঠিক ঘটনা তথা সত্য উদ্ঘাটন করে আদালতের কাছে তা উপস্থাপন করাটাই তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব।'

এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা দেখতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে খুরশীদ আলম খান জানান, আদালতের এ নির্দেশনা মোতাবেক একটি প্রতিবেদন দিয়েছি। আদালতকে দেখিয়েছি ১১ জন তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। তারা এর জবাব দিয়েছে। দুদক তাদের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেছে। আর এই ঋণ জালিয়াতির ৩৩টি মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

'তখন আদালত জানতে চেয়েছেন এই ১১ জন কারা, তাদের বিরুদ্ধে কী কারণে মামলা রুজু করা হয়েছে। তা বুধবারের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে।'

গত জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় 'ভুল' আসামি জেলে 'স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত।

\হএ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ ছাড়া রুলও জারি করেন আদালত।

পরে ৩ ফেব্রম্নয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চেয়েছেন। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন।

এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কান্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন চেয়েছিলেন।

জাহালম নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না আমি নির্দোষ।' আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশ্যে তাকে বারবার বলতে দেখা যায়, 'আমি আবু সালেক না।'

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63389 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1