বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন কবরের জায়গা নেই আজিমপুর কবরস্থানে

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

রাজধানীতে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। এত মানুষের জন্য ঢাকায় সরকারিভাবে কবরস্থান আছে মাত্র আটটি। এর মধ্যে সব থেকে বেশি মরদেহ দাফন করা হয় আজিমপুর কবরস্থানে। এ কবরস্থানটিতে মরদেহ দাফনের ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন নতুন কবরের জন্য সাড়ে তিন হাত জমির বড়ই আকাল এ শহরে।

বৃহস্পতিবার আজিমপুর কবরস্থানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

আজিমপুর কবরস্থানটি রাজধানীর লালবাগ এলাকায় অবস্থিত। ইতিহাসবিদদের ধারণা, ঢাকা শহরের গোড়াপত্তনের সময়ই এ কবরস্থানটি নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এর নতুন ও পুরনো অংশ মিলিয়ে আয়তন প্রায় ৩৭ একর।

নতুন কবরের জন্য স্থানসংকুলান না হওয়ায় প্রতি দুই বছর পর পর পুরনো কবরই আবার নতুন করে খুঁড়ে সেখানেই মরদেহকে দাফন করা হচ্ছে। ফলে, হারিয়ে যাচ্ছে অনেকের প্রিয় বাবা-মা, ভাই-বোনসহ মৃত আত্মীয়-স্বজনের শেষ স্মৃতিটুকু। হারিয়ে যাচ্ছে প্রিয় মানুষটির মতো তার কবরটিও।

একটি কবরের কাছে দাঁড়িয়ে জিয়ারত করছিলেন জিলানী (৬৫ বছর) নামে এক ব্যক্তি। জিয়ারত শেষে কার কবর জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাবা-মা, ভাই-বোন ও দুই পরিবারের (স্ত্রী) কবর এখানে আছে। কবরগুলো কোথায় জানতে চাইলে নির্দিষ্ট করে দেখাতে নতুন কবরের জায়গা নেই আজিমপুর

কবরস্থানে

পারলেন না তিনি। বলেন, এখানে পুরনো কবরে আবার নতুন করে অন্য কাউকে দাফন করা হয়। কার কবর কোনটা, বলা মুশকিল।

জানা যায়, সমাজের বিত্তবানদের জন্য আজিমপুর কবরস্থানে ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫ বছরের জন্য যথাক্রমে ১ লাখ ৫০ হাজার, ৩ লাখ, ৬ লাখ, ৯ লাখ ও ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে জায়গা বরাদ্দ নেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে, এসব কবরেও দেখা যায়, একই জায়গায় দুই থেকে পাঁচটি মরদেহ দাফন করা হয়ে গেছে।

কবরস্থানের মূল গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে একটু দূরেই কিছুটা লালচে রংয়ের একটি পাকা কবরের দেখা মেলে। এ কবরটিতে মোট পাঁচজনকে দাফন করা হয়েছে। প্রথমে কেরানীগঞ্জের হাজী তোতা মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে ১৯৪৮ সালে কবর দেয়া হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে মোহাম্মদ হোসেন নামে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের আরও একজনকে কবর দেয়া হয়। ২০০০ সালে একই কবরে তোতা মিয়ার ছেলে হাজী ইউসুফ জাহানকে দাফন করা হয়। ২০১১ সালে তোতা মিয়ার নাতী ও ইউসুফ জাহানের ছেলে হাসমত জাহানকে কবর দেয়া হয়। সবশেষ ২০১৮ সালে মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডের রফিকুন্নবী জাহান ওমরাহ্‌ নামে একজনকে দাফন করা হয় এ কবরটিতে। আজিমপুর কবরস্থানে এ ধরনের অসংখ্য কবরের দেখা পাওয়া যায়।

আজিমপুর কবরস্থান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিয়ন্ত্রণাধীন। ডিএসসিসি উপ-সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, এ কবরস্থানে মোট কতজনকে কবর দেয়া হয়েছে, তার সঠিক তথ্য কারও কাছে নেই। তবে, দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫টি মরদেহ এ কবরস্থানে দাফন করা হয়। ভবিষ্যতে কারও কবর যেন হারিয়ে না যায়, সে জন্য সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিটি কবরের একটি নির্দিষ্ট নম্বর দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে, একটি কবরে যতজনকেই দাফন করা হোক না কেন, নম্বর দেখেই বুঝতে পারবেন, এটিই প্রিয়জনের কবর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63703 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1