বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারেরও শক্তিশালী বন্ধু আছে: কাদের

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে বিআরটিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন Ñযাযাদি
বিশ্বে মিয়ানমারেরও শক্তিশালী বন্ধু থাকার বিষয়টি মাথায় রেখে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
দুদিন আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর দ্বিতীয় দফা পরিকল্পনা ব্যর্থ হলেও একে সরকারের ব্যর্থতা মানতেও নারাজ তিনি।
শনিবার ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে বিআরটিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের আলোচনা সভায় রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন কাদের।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার সেখানে (রাখাইন রাজ্য) পরিবেশ সৃষ্টি করেনি, নিরাপত্তা সৃষ্টি করেনি, সিটিজেনশিপের মতো বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি; এজন্য তাদের বিশ্বাস করতে পারেনি রোহিঙ্গারা। এর দায় মিয়ানমার সরকারকে নিতে হবে।’
এখন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের পথে যাব না, আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখব। সেই কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। এখানকার সমস্যাটা জটিল। এই জটিলতার মধ্যে যুদ্ধ পরিহার করে ঠা-া মাথায় আলাপ-আলোচনা করে এর সমাধান করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
‘এ ব্যাপারে আমাদের মনে রাখতে হবে, মিয়ানমারেরও বন্ধু আছে এবং শক্তিশালী বন্ধু আছে।’
মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রদের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে ডিপ্লোমেসিটা ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি। এখানে জিও ফিজিক্যাল কন্ডিশনে মিত্রতা সৃষ্টি হয়, ইকোনমিক কারণে মিত্রতা হয়। সবার একটা অংক আছে, হিসাব আছে। সেই হিসাবে মিয়ানমারের বন্ধুরা কম শক্তিশালী নয়। কাজেই আমাদের কৌশলী হতে এগোতে হচ্ছে।’
কূটনৈতিক ব্যর্থতার সমালোচনার জবাবে কাদের বলেন, ‘এখানে ব্যর্থতার কোনো
বিষয় নেই। এখানে কৌশলগত বিষয় রয়েছে। অনেক সময় দু পা এগিয়ে এক পা পিছিয়ে যেতে হয়। এটিকে কূটনীতিক ব্যর্থতা বলা যাবে না।’
‘সবকিছু মিলিয়ে জাতিসংঘ, ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে শেখ হাসিনা সরকার যতটা কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে, এটা অন্য কোনো দেশে সম্ভব হয়নি। এজন্য রোহিঙ্গারা আসার পর মিয়ানমার সরকার সবচেয়ে বেশি চাপ অনুভব করছে।’
রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে অবস্থানের কারণে কক্সবাজারে পর্যটনসহ সব ক্ষেত্রে ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরেন কাদের।
কক্সবাজারে যুবলীগের এক নেতার রোহিঙ্গাদের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সেখানে রোহিঙ্গারা ১১ লাখ, আমাদের ৪ লাখ।
‘রোহিঙ্গাদের মধ্যে সবাই যে নিরীহ-শান্ত, সেটা মনে করার কারণ নেই। তাদের মধ্যে হতাশা আছে, বেপরোয়া মনোভাব আছে। সেটার একটা বিচ্ছিন্ন প্রকাশ ঘটেছে।’
বিআরটিসিতে ‘লাভের
গুঁড় পিঁপড়ায় খাচ্ছে’
বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে দুর্নীতি নির্মূলে জোর দেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “দুর্নীতিমুক্ত না হলে বিআরটিসি লাভের মুখ দেখবে না। লাভের গুঁড় এখানে পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে। যারা ওপরে আছেন, ভাগাভাগি তারাই করেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা সহযোগিতা করলে বিআরটিসিকে লাভবান করা সম্ভব। বিআরটিসি থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা হবে। এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে দেখাব।’
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে এই সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে