শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
নতুন ক্রয়ে জটিলতা

ভারত থেকে ধারে ইঞ্জিন আনতে অনাগ্রহ রেলের

নতুন লোকোমোটিভ ক্রয়ে ২টি প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও জটিলতার কারণে কবে তা পৌঁছাবে তার সঠিক সময় বলতে পারছে না কর্মকর্তারা
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সরকার চাইলেও ভারত থেকে ধারে ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) আনতে আগ্রহ কম বাংলাদেশ রেলওয়ে অধিদপ্তরের।

রেল সূত্রে জানা গেছে, মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) প্রায়ই মাঝপথে বিকল হওয়ায় রেল চলাচল ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। ফলে সারা বছরই বিভিন্ন গন্তব্যে শিডিউল বিপর্যয় লেগেই থাকছে। অথচ নতুন ইঞ্জিন রেলে কবে নাগাদ যুক্ত হবে তা অনেকটাই অনিশ্চিত।

এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রী ভারত সফরের সময় ২০টি ইঞ্জিন দুই বছরের জন্য ধার চান। ভারত সরকারের পক্ষে থেকে ইঞ্জিন ধার দেয়ার ব্যাপারে সম্মতিও প্রকাশ করা হয়। তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারে ইঞ্জিন আনতে আগ্রহ কম বলে জানা গেছে। আর এ কারণেই ইঞ্জিন ধারের বিষয়টি যাতে দ্রম্নত অগ্রসর না হয় সে জন্য তারা নানা জটিলতা সৃষ্টি করছেন বলে সংশ্লিষ্ট মহল অভিযোগ তুলেছেন।

রেল সূত্রে জানা গেছে, গত ২ থেকে ৮ আগস্ট ভারত সফরকালে ভারত সরকারের কাছে ১০টি মিটার গেজ ও ১০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন ধারের কথা বলেন, রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এর পরে বাংলাদেশ রেলওয়ে অধিদপ্তরের অপারেশন বিভাগের পক্ষ থেকে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের অপারেশন বিভাগ থেকে মেকানিক্যাল বিভাগকে কোন ধরনের ইঞ্জিনের দরকার তার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু এরই মধ্যে অপারেশন বিভাগকে না জানিয়েইে মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে ভারতের রেলওয়ের ট্রাফিক (পূর্ব) বিভাগের পরিচালক মনজ কুমার শ্রিভাস্তবের কাছে ইঞ্জিন দেখার জন্য প্রাথমিকভাবেই পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল ভারতে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব করে চিঠি পাঠান। মেকানিক্যাল বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সৈয়দ ফরুক আহমদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে পাঁচ সদস্য নাম দেখে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ বিস্মিত হন। কেননা ইঞ্জিন ধারের বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায় রয়েছে। এমনকি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়নি বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। তাই ভারত দ্রম্নত সব অফিসিয়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইলেও মেকানিক্যাল বিভাগের অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, নতুন লোকোমোটিভ ক্রয়ের জন্য ২০১৫ সালে একটি ও ২০১৭ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু নতুন লোকোমোটিভ ক্রয়ে জটিলতার কারণে কবে নাগাদ তা এসে পৌঁছাবে তার সঠিক সময় বলতে পারছে না রেলওয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, একটি লোকোমোটিভের মেয়াদ থাকে ২০ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৯০টি ব্রডগেজ ও ১৭৩টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ রয়েছে। আর এসব লোমোটিভের মধ্যে ১৯৫৩ সালের ৯টি, ১৯৬১ সালের ৩১টি, ১৯৬৯ সালের ২১টি, ১৯৭৮ সালের ১১টি, ১৯৮১ সালের ২টি, ১৯৮১ সালের ১৬টি, ১৯৮২ সালের ১টি, ১৯৮৮ সালের ১৬টি, ১৯৯৫ সালের ২১টি, ১৯৯৬ সালে ৬টি, ১৯৯৯ থেকে ২০১৩ সালে ৩৯টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ রয়েছে। আর ১৯৬৬ সালে ১৭টি, ১৯৭০ সালের ১৪টি, ১৯৮১ সালে ২০টি, ২০০১ সালে ১৩টি ও ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের ৩৯টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ রয়েছে। যার ৯১টিই মেয়াদ উত্তীর্ণ।

রেল সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ৩৮৬টি রেল চলাচল করে। এর মধ্যে ৩৫৬টি যাত্রীবাহী ও ৩০টি মালবাহী।

ভারত থেকে রেলের লোকোমোটিভ ধারে আনার প্রক্রিয়া শুরুর প্রাথমিক পর্যায় আইন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই ইঞ্জিন দেখার বিষয় জানতে চাওয়া হয় রেলের অতিরিক্ত সৈয়দ ফারুক আহমেদের কাছে। তিনি বলেন, চুক্তি হওয়ার আগে ইঞ্জিন দেখা দরকার, সে জন্যই পরিদর্শনের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে তেমন জটিলতার সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78217 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1