নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বেগম রোকেয়া যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা বাস্তবায়নে যা যা করণীয় সরকার তা করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন এবং রোকেয়া পদক ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, শিশু আর নারীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন মানসিক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে গেছে।
'আসলে নির্যাতন তো করে পুরুষেরা। তাদের তো এটা ভাবা উচিত তার নিজেরও সন্তান আছে, কন্যাসন্তান আছে। সেই সন্তান যদি কারো দ্বারা নির্যাতিত হয়। তখন তিনি কী চিন্তা করবেন বা ভবিষ্যতে তার কী চিন্তা হবে।'
নারী-শিশু নির্যাতন রোধে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু আইন দিয়ে সব হয় না।
'আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ যেমন অর্থনৈতিকভাবে অগ্রগতি লাভ করে একটা অবস্থান নিয়েছে। ঠিক নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর সমতা সেগুলোর ক্ষেত্রেও কিন্তু আজকে বিশ্বে বাংলাদেশ তার একটা অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছে এবং এটা অব্যাহত রাখতে হবে।'
'আমি সারা বাংলাদেশে একশটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। সেখানে মেয়ে উদ্যোক্তারা বিশেষ সুবিধা পাবেন, সেটাও আমরা নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। সর্বক্ষেত্রে মেয়েরা কাজ করুক সেটাই আমরা চাই।'
শেখ হাসিনা বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বেগম রোকেয়া যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে যা যা করণীয় সরকার তা করে যাচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি নারীদের পুনর্বাসনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্য জাতির পিতা পুনর্বাসন বোর্ড তৈরি করে দেন, আলাদা বাজেট দেন এবং তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সেই মেয়েদের চিকিৎসার জন্য তিনি সুইজারল্যান্ড থেকে নার্স, জার্মানি এবং ইংল্যান্ড থেকে ডাক্তার নিয়ে আসেন। তাদের চিকিৎসা করানো হয়।
বাবার সঙ্গে মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কথাও স্মরণ করে সরকারপ্রধান বলেন, অনেক পরিবার তাদের (নির্যাতিত নারীদের) নিয়ে যায়। অনেক পরিবার তাদের নেয় না।
'তাদেরকে একসাথে করে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন আমার মা, নিজে থেকে অনেক এই ধরনের নির্যাতিত মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়েছেন। তিনি সব সময় এই ধরনের মেয়েদের কথা চিন্তা করতেন।'
তিনি বলেন, একটা সমাজকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে গেলে নারী-পুরুষের অধিকার শুধু সুরক্ষিত না কাজ করার সুযোগ দিলেই একটা সমাজ কিন্তু গড়ে উঠবে। কারণ যেখানে একটা সমাজের অর্ধেকই নারী। কাজেই একটা অঙ্গ যদি সেখানে উন্নত না হয় শুধু একটা দিক দিয়ে তো একটা সমাজ গড়ে উঠতে পারে না।
'কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই জাতির পিতা যে কাজগুলো করে গিয়েছিলেন যে নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন আমরা কিন্তু সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আজকে এগিয়ে যাচ্ছি।'
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।