শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ দেশে মানুষের ভোটের অধিকার নেই: ফখরুল

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০৮
সোমবার ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -যাযাদি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, '৪৯ বছর আগে আজকের এই দিনে আমরা দীর্ঘ নয় মাস একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম। ...কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, আজকে ৪৯ বছর পরে এ দেশ সম্পূর্ণ গণতন্ত্রবিহীন হয়ে পড়েছে।' তিনি বলেন, এ দেশে আজ মানুষের ভোটের অধিকার নেই। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজকের এই দিনে আমরা একটি স্বাধীন ভূখন্ড লাভ করেছিলাম। স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, একটি গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, আজকে ৪৯ বছর পরে এ দেশ সম্পূর্ণ গণতন্ত্রবিহীন হয়ে পড়েছে। এ দেশে আজকে মানুষের কোনো অধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো সমস্ত হরণ করে নেওয়া হয়েছে।' বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার সহধর্মিণী সে সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাকে আজকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন আপসহীনভাবে। তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন জনগণের ভোটে। আজকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্মমভাবে, অন্যায়ভাবে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে।' জনগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে মুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকে আমাদের এ দেশে দুঃখজনকভাবে গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার নেই, মানুষের নূ্যনতম অধিকারগুলো নেই, সেগুলো হরণ করে নেওয়া হয়েছে। আমরা আজকের এই দিনে যে চেতনার ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সে চেতনার ভিত্তিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে মুক্ত করব।' সাভার স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে সোমবার দুপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। ফখরুল বলেন, 'এই সরকার তার নিজের রাজনৈতিক প্রয়োজনে হীন উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন তালিকা তৈরি করেছে। বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই সমস্ত তালিকা তারা প্রকাশ করেছে। এটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার না করে এই এতদিন পরে রাজাকারের তালিকা কতটুকু সঠিক হয়েছে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।' বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করছি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সমস্ত শহীদরা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি। আমরা আরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে; যাকে অন্যায়ভাবে এই সরকার কারাবন্দি করে রেখেছে। তিনি ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছেন এবং নির্যাতিত হয়েছেন।' ফখরুল বলেন, 'স্বাধীনতা যুদ্ধ আমরা করেছিলাম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য; গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার জন্য। আজকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় আমাদের সেই চেতনাগুলোকে হরণ করা হয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে, মানুষের স্বপ্নগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, জোর করে ক্ষমতায় এসেছে এই সরকার। তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করার জন্য সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে ফেলছে। তিনি বলেন, 'এইখানে আমরা শপথ নিয়েছি আমরা জনগণকে সংগঠিত করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব।' এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনসহ ছাত্রদল, যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে