বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৃতু্যপরবর্তী অনুদান চান ইউপি সচিবরা

নতুনধারা
  ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

হাসান আরিফ

চাকরিরত অবস্থায় মৃতু্যবরণ করলে সরকারিভাবে আট লাখ টাকা অনুদান চায় ইউনিয়ন পরিষদ সচিবরা। যদিও তারা জাতীয় বেতনস্কেলের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। কিন্তু চাকরিরত অবস্থায় মৃতু্যবরণ করলে সরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় না তাদের পরিবার। তাই তাদের অনুদানের বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থ বিভাগে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রামপুলিশ চাকরিরত অবস্থায় মৃতু্যবরণ করলে এককালীন অনুদান পেয়ে থাকে। এর মধ্যে দফাদার ৬০ হাজার টাকা এবং মহলস্নাদার ৫০ হাজার টাকা পেয়ে থাকে। কিন্তু পরিষদের সচিবরা তা পাচ্ছেন না। তাই ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত সচিবরা চাকরিরত অবস্থায় মৃতু্যবরণ করলে এককালীন অনুদান হিসেবে আট লাখ টাকা অনুদান বরাদ্দের জন্য বলা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ তানভীর আজম ছিদ্দিকী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী শতাব্দীর প্রাচীনতম স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। তৃণমূল পর্যায়ের যাবতীয় উন্নয়ন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরিসীম। ইউপি সচিবরা জাতীয় বেতনস্কেলের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছে। কিন্তু চাকরিরত অবস্থায় মৃতু্যবরণ করলে সরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় না। তাই ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত সচিব চাকরিরত অবস্থায় মৃতু্যবরণ করলে এককালীন অনুদান প্রাপ্তির বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

দেশের শতকরা ৯০ ভাগ লোক বসবাস করে। আর এই গ্রামাঞ্চল পরিচালিত হয় স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে আদি এবং সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ দ্বারা। তাই বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদও ডিজিটালাইজেশনের আওতাভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এই পরিষদ চলছে সেই মান্ধাতা আমলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। নয়জন গ্রাম পুলিশ, একজন দফাদার আর দাপ্তরিক কাজের জন্য একজন ইউপি সচিব।

জানা গেছে, বাংলাদেশের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিভিন্ন কাজসহ ইউনিয়নের নিজস্ব হাজারো কাজ করতে হচ্ছে। মূলত ইউনিয়ন পরিষদের অফিস ব্যবস্থাপনার যাবতীয় কাজ পরিচালনা করেন সচিব। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের একজন দায়িত্বশীল কর্মচারী হিসেবে বাজেট তৈরি থেকে শুরু করে পরিকল্পনা প্রণয়ন পর্যন্ত অনেক রকম দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এর মধ্যে সনদ প্রদান, কর আদায়, গ্রাম আদালত পরিচালনাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ। এছাড়া, বছরে বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি অডিট নিষ্পত্তিসহ সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ধার্যকৃত আদেশ পালন করতে হয়।

চেয়ারম্যান হচ্ছেন জনপ্রতিনিধি এবং সচিব হচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কর্মচারী। চেয়ারম্যান বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় অফিসের কাজে অনেক ক্ষেত্রে সময় দিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে সচিব চেয়ারম্যানকে অফিসের কাজে সহায়তা করেন। এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি অফিসের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করেন। স্থানীয় পরিষদ পরিচালনার জন্য সরকারের আইন ও বিধি আছে। সেই আইন ও বিধি অনুযায়ী সচিব ইউনিয়ন পরিষদের অফিস ব্যবস্থাপনার কাজ করা দায়িত্বও তার উপরই রয়েছে।

এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ, তদারক ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সচিব সংরক্ষণ করেন যেমন- সম্পত্তি অর্জন, বিক্রয়, দান, বন্ধক, বিনিময়, ইজারা প্রভৃতি। পরিষদের সম্পত্তির যাবতীয় দলিল, চুক্তিনামা ও সম্পত্তি ইজারা দলিল স্থায়ী নথি হিসেবে গার্ড ফাইলে সংরক্ষণ করা। পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজের যথা- রাস্তাঘাট নির্মাণ, সেতু নির্মাণ, খনন কাজ, নলকূপ স্থাপন তদারকি করা। হাট-বাজার উন্নয়ন সংক্রান্ত খাতাপত্র ক্যাশ বই, ব্যাংকের হিসাব বই, চেক বই, রেজিস্ট্রার ও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার ডিপোজিট বই, চিঠিপত্র প্রেরণ ও প্রাপ্তি রেজিস্ট্রার এবং বিবিধ খরচের ভাউচার, গার্ড ফাইল ইত্যাদি তার নিয়ন্ত্রণেই থাকে। এর বাইরে বিচার বা সালিশ অনুষ্ঠিত হবার আগে ফরিয়াদি এজাহার করতে যে ফি জমা দেয় সচিব তা গ্রহণ করেন। সচিব চেয়ারম্যানের আদেশে গ্রাম পুলিশের (চৌকিদার) মাধ্যমে আসামিকে সমন জারি বা নোটিশ প্রদান করেন এবং বিচারের রায় ঘোষণা ও এ সংক্রান্ত কাগজপত্র সচিব নথি আকারে রেকর্ড করে রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<86326 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1