মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ অর্ধশত রোহিঙ্গা নিয়ে ধূম্রজাল

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ট্রলারডুবিতে উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গারা -ফাইল ছবি

কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন উপকূলে ডুবে যাওয়া মালয়েশিয়াগামী ট্রলার থেকে নিখোঁজ দাবি করা অর্ধশত রোহিঙ্গাকে নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রলারডুবির ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও সেন্ট মার্টিন দ্বীপের আশপাশ এবং সমুদ্রে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েও কাউকে মৃত বা জীবিত না পাওয়ায় এ ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রব।

তিনি বলেন, ১১ ফেব্রম্নয়ারি সকালে ডুবন্ত ট্রলার থেকে ১২ নারী ও তিন শিশুসহ ১৫ রোহিঙ্গার মরদেহ ও ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা ও মাঝিমালস্নারা আরও নিখোঁজ থাকার কথা বললেও কেউ ট্রলারে ওঠা যাত্রীর সংখ্যা সঠিক বলতে পারেননি। কেউ বলেছে ১২০, কেউ বলেছে ১৩৮, কেউ বলেছে ১২৪ জন যাত্রী ছিল। কিন্তু জীবিত-মৃত মিলিয়ে সর্বসাকুল্যে ৮৮ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

আবদুর রব আরও বলেন, ডুবন্ত ট্রলারও কূলে তুলে আনা হয়েছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড হেলিকপ্টার নিয়ে চক্কর দিয়েও নিখোঁজদের খুঁজে পায়নি। কেউ সাঁতরে তীরে এসে উঠেছে কি-না জানতে দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম তীরের বাড়িঘরেও খোঁজ নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোথাও মৃত বা জীবিত কাউকে আর পাওয়া যায়নি। এ কারণে ট্রলারে যাত্রী সংখ্যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি রয়েছে। যারা উদ্ধার হয়েছে এর চেয়ে বেশি লোক থাকলে মৃত বা জীবিত পাওয়ার কথা। কারণ দ্বীপ থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার বা লুকিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই।

কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে. মো. সোহেল রানা বলেন, ট্রলারডুবির ঘটনায় ১৫ জন মৃত এবং ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়াদের তথ্য মতে, ওই ট্রলারে আরও অন্তত ৫০ জন রোহিঙ্গা ছিল। তারা নিখোঁজ রয়েছেন। আমরা ঘটনার পর থেকে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রম্নয়ারি) বিকাল পর্যন্ত সাগরের বিভিন্ন স্থানে কোস্টগার্ডের দুটি জাহাজ, স্পিডবোট ও ট্রলার নিয়ে তলস্নাশি করেছি। কিন্তু কাউকে এখনো জীবিত বা মৃত পাওয়া যায়নি।

সাগরে কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনীর জাহাজ টহলে রয়েছে। জেলেরাও রয়েছে। যে কেউ সাগরে ভাসমান কাউকে পেলে উদ্ধার করতে প্রস্তুত। কূলেও কারও সন্ধান পেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে নির্দেশনা দেয়া আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, বুধবার (১২ ফেব্রম্নয়ারি) রাতে ১৯ মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এদিকে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহত ১৫ জনের মধ্যে ৯ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপর ছয়জনের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাদের মরদেহ এখনো মর্গে রয়েছে।

আর আদালতের নির্দেশে ৬৯ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুকে স্ব স্ব ক্যাম্প ইনচার্জদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। উদ্ধার ট্রলার থেকে চারজন এবং স্থলভাগ থেকে আটক অপর চারজনসহ সন্দেহজনক আট দালালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

উলেস্নখ্য, সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার আশায় বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গত ১০ ফেব্রম্নয়ারি (সোমবার) রাতে টেকনাফের মহেশখালীয়াপাড়া এলাকা দিয়ে ট্রলারে ওঠে শতাধিক রোহিঙ্গা। সেন্ট মার্টিন উপকূলে গিয়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। মালয়েশিয়াগামীদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী। দালালদের মাধ্যমে সেন্ট মার্টিন উপকূল পাড়ি দিতে গিয়ে ট্রলারটি ডুবে গেলে ভাসমান অবস্থায় ১৫ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। একই সঙ্গে আরও ৭৩ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ট্রলারে আরও অন্তত ৫০ রোহিঙ্গা ছিল বলে দাবি উদ্ধারকৃতদের। তাদের খোঁজে তিন দিন অনুসন্ধান চালালেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ফলে এ নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88646 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1