শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছাপানো সংবাদপত্র বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে

বিডি নিউজ
  ২৭ মার্চ ২০২০, ০০:০০

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অফিস-আদালত বন্ধ, আবার রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় হকারের মাধ্যমে আসা ছাপানো সংবাদপত্রও এড়িয়ে চলছেন অনেকে। ফলে ঢাকায় সংবাদপত্রের বিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে হকারদের কাছ থেকে তথ্য মিলেছে।

গত ১৫ দিন ধরে সংবাদপত্রের চাহিদা একটু একটু করে কমছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের প্রথম ঘটনা ধরা পড়ে গত ৮ মার্চ। তার আগের তুলনায় গত মঙ্গলবার সংবাদপত্রের বিক্রি ৬০ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে হকার্স ইউনিয়ন।

গত কয়েকদিনে ঢাকার বাইরের কয়েকটি সংবাদপত্র ঘোষণা দিয়েই ছাপানো বন্ধ করেছে।

এই পরিস্থিতিতে সংবাদপত্র মালিকদের একটি সংগঠন নোয়াবকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাঠক ধরে রাখার প্রয়াস চালাতে দেখা গেছে।

ঢাকাবাসী অনেকেই বলছেন, তারা এই পরিস্থিতিতে ছাপানো সংবাদপত্রের বদলে ইন্টারনেট সংবাদপত্রের ওপরই নির্ভর করছেন।

বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করা কোভিড-১৯ রোগী গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়ে। তারপর থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষের পারস্পরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা শুরু হয়।

সংক্রমণ এড়াতে নগদ টাকা, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে গণভাবে ব্যবহৃত হেলমেট, পত্রিকা ধরতে এখন সতর্কতা অবলম্বন করছে মানুষ।

ঢাকা সংবাদপত্র হকার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির মহাব্যবস্থাপক মোবারক হোসেন টুটুল বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে একটু একটু করে কমতে শুরু করে সংবাদপত্রের গ্রাহক।

'সর্বশেষ গত ৩-৪ দিনে বেশি পরিমাণে কমেছে। বলতে গেলে গত ১৫ দিনে ঢাকায় পত্রিকার বিক্রি ৫০ শতাংশ কমে গেছে।'

সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়ন সংশ্লিষ্ট আরেকজন নেতা বলেন, মঙ্গলবার পত্রিকার বিক্রি ৬০ শতাংশ কমে গেছে।

'করোনাভাইরাসের ভয়ের পাশাপাশি ঢাকা শহর থেকে মানুষজন চলে যাওয়াও এর একটা কারণ। বিষয়টি নিয়ে আমরা পত্রিকার মালিকদের সংগঠন নোয়াবের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার চিন্তা-ভাবনা করছি।"

কয়েকটি সংবাদপত্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও প্রচার সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তবে 'স্পর্শকাতর' এই বিষয়ে কথা বলায় তারা কেউ পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।

হকার ইউনিয়নের নেতারা জানান, দেশে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকার ২৫ লাখেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। বাংলা পত্রিকাগুলোর মধ্যে প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, যুগান্তর, আমাদের সময়, কালের কণ্ঠ, সমকাল, ইত্তেফাক, ইনকিলাব, নয়াদিগন্ত ও যায়যায়দিন সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকার তালিকায় রয়েছে। আর ইংরেজি পত্রিকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ডেইলি স্টার, ঢাকা ট্রিবিউন, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, নিউ এইজ।

প্রতিটি পত্রিকার গ্রাহক প্রায় সমান তালেই কমেছে বলে হকার্স ইউনিয়নের তালিকা থেকে জানা গেছে।

মিরপুরে পীরেরবাগ এলাকায় পত্রিকা বিতরণের কাজে নিয়োজিত একজন বলেন, মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক ঢুকে গেছে, সে কারণেই পত্রিকা আপাতত এড়িয়ে চলতে চাচ্ছেন।

'গত কয়েকদিন ধরে সকালে পত্রিকা দিতে গেলে বাসার লোকজন আপাতত পত্রিকা না নেওয়ার কথা জানিয়ে দিচ্ছে। অনেকে বাড়ি চলে গেছে। এখন ৩০ শতাংশ গ্রাহক আছে কিনা তাতেও সন্দেহ।'

মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের একজন এজেন্ট বলেন, আগে অফিস-আদালত খোলা ছিল। মিরপুরে সারাক্ষণ মানুষে গিজগিজ করত। অনেকেই চলতি পথে পত্রিকা কিনতেন। এখন রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। তাই পত্রিকার বিক্রিও কমে গেছে।

ঢাকায় ৬৩টি কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন বিতরণ করা হয় সংবাদপত্র। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় পত্রিকা বিতরণের কাজে যুক্ত বলে হকার্স ইউনিয়ন জানিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94265 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1