বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা রোধে পুলিশের নানামুখী উদ্যোগ

তানভীর হাসান
  ৩০ মার্চ ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাস রোধে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের তৎপরতা বৃদ্ধি, জনসচেতনতা তৈরি, হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা এবং দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পৃষ্ঠা ১১ কলাম ১

গুজবরোধসহ আরও যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়ার আভাসও পাওয়া গেছে। এ জন্য পুলিশের সব ইউনিট একযোগে কাজ করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে প্রবাসীরা দেশে আসতে শুরু করার পর থেকেই হোম কোয়ারেন্টিন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয় পুলিশ। বিদেশফেতর লোকদের হাতে তুলে দেয়া হয় প্রচারপত্র। তাদের পরামর্শ দেয়া হয় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে। বিদেশফেরত মানুষ হোম কোয়ারেন্টিন মানছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে সব বিদেশফেরত নাগরিকদের তালিকা প্রস্তুত করে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান এবং জেলার এসপিদের কাছে পাঠানো হয়। এসপিদের মাধ্যমে এসব তালিকা সরবরাহ করা হয় জেলা প্রশাসক, জেলা সিভিল সার্জন এবং আনসার কমান্ডারদের কাছে। হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে বিদেশফেরত মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। তাদের বাড়ি স্টিকার দিয়ে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করা হয়।

সূত্র মতে, পাসপোর্টে উলেস্নখিত ঠিকানায় গিয়ে অনেক বিদেশফেরত মানুষকে পায়নি পুলিশ। তাই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সাধারণ মানুষের কাছে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, কেউ যদি পাসপোর্টে উলেস্নখিত ঠিকানায় না থাকেন, তাহলে যেন তাদের অবস্থান নিকটবর্তী থানায় অবগত করেন। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে পুলিশ সদর দপ্তরের বার্তায় বলা হয়, তাদের এলাকায় যদি কেউ বিদেশফেরত নাগরিক থাকে এবং ওই নাগরিক যদি হোম কোয়ারেন্টিন না মানেন, সেটা যেন পুলিশকে জানানো হয়। তাহলে পুলিশই ওই নাগরিককে হোম কোয়ারেন্টিন মানতে বাধ্য করবে। এরপরও অনেক বিদেশফেরত নাগরিক পুলিশের ডাকে সারা দেয়নি। এ কারণে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত জেল-জরিমানা করা শুরু করেছে। যারা কোয়ারেন্টিনে ছিলেন বা আছেন, তাদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বিভিন্ন ইকুইপমেন্টসহ ফুড বাস্কেট পাঠানো হয়েছে বা হচ্ছে। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজন পুলিশকে ফোন করলে তাদের বাসায় গিয়ে বাজারও পৌঁছে দেয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করেনাভাইরাস সংক্রান্ত সারাদেশের সবশেষ অবস্থা জানতে পুলিশ সদর দপ্তরে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এই কন্ট্রোল রুম দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকছে। পরিস্থিতি মনিটরিং এবং মাঠপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের সার্বক্ষণিক দিক-নির্দেশনা দিতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিটভিত্তিক পৃথক কমিটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশের আইজি ব্যক্তিগতভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের সব ইউনিটের সঙ্গে কথা বলছেন। মোবাইল ফেন এবং ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে সরকারের সব নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের কাছে।

এ বিষয়ে রোববার পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সরকারের নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম থেকেই আমরা কাজ করছি। জনসচেতনতা কার্যক্রমের আওতায় সারাদেশে সাধারণ মানুষের জন্য কয়েক লাখ লিফলেট তৈরি করেছি। হ্যান্ডবিল প্রস্তুত করেছি। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এসব লিফলেট হ্যান্ডবিল ব্যাপকভাবে বিতরণ করেছে। সচেতনতামূলক নানা ধরনের ব্যানার তৈরি করে পুলিশের গাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যবহার করেছি। সারাদেশে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং কার্যক্রম এখনো চলছে। মসজিদ এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর সাউন্ড সিন্টেমস কাজে লাগিয়ে মানুষকে সচেতন করা হয়। পুলিশের উদ্যোগে লোকাল ক্যাবল নেকওয়ার্ক ব্যবহার করে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস থেকে ঢাকা মহানগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি। সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের নির্দেশনা আসছে, সেসব যেন যথাযথভাবে মেনে চলা হয়, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জানতে চাইলে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে লিফলেট তৈরির পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের নেতিবাচক প্রভাব উ্‌দ্ভূত আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি সোহেলা রানা জানান, দেশব্যাপী সুরক্ষা উপকরণের স্বল্পতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই পুলিশ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক এবং হ্যান্ড গস্নাভস প্রস্তুত করে নিজেদের মধ্যে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছে এবং করে যাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94630 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1