শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতার পর দেশে আলু উৎপাদন বেড়েছে ১১ গুণ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
জমি থেকে সংগ্রহের পর আলু স্তূপ করে রাখছেন কৃষক -ফাইল ছবি

চলতি বছর দেশে ৪ দশমিক ৭১ লাখ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যা আলুর উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল মাত্র ৮ দশমিক ৯১ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪ লাখ ৭১ হেক্টর জমিতে ৯২ দশমিক ৫৪ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন করা হয়েছিল।

হিসেব অনুযায়ী দেখা যায়, দেশে স্বাধীনতার পরে আলু উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ গুণ। এ ছাড়া আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বে সপ্তম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরো (বিবিএস), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এফএওর তথ্য মতে, এক দশক আগেও বাংলাদেশে আলুর উৎপাদন ছিল অর্ধ লাখ টনের নিচে। এখন তা প্রায় এক কোটি টনের কাছাকাছিতে দাঁড়িয়েছে। এ সাফল্য বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে আলু উৎপাদনকারী শীর্ষ দশ দেশের কাতারে। স্বীকৃতিটি দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।

সংস্থার তথ্য অনুয়ায়ী, ৮৩ লাখ টন আলু উৎপাদন নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে। আট কোটি ৮৪ লাখ টন আলু উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন। চার কোটি ২৩ লাখ টন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এরপর রাশিয়া (৩য়), ইউক্রেন (৪র্থ), যুক্তরাষ্ট্র (৫ম), জার্মানি রয়েছে ষষ্ঠ অবস্থানে।

উৎপাদনে বিস্ময়কর সাফল্যই কেবল নয়, আলু এখন দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসলও। মাধ্যম হয়ে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আলু উৎপাদনের বিষয়টি অবহিত করেন। কৃষিমস্ত্রী বলেন, এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে আলু পাঠানো যাবে। কৃষিমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব করেন করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশে 'দিন আনি দিন খাই' মানুষদের যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে তার সঙ্গে ১০ কেজি করে আলু যোগ করা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী কৃষিমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ত্রাণের সঙ্গে আলু যোগ করার কথা বলেন। এখন দেশের অনেক স্থানেই ত্রাণ বিতরণকালে চাল, ডাল, তেলের সঙ্গে আলু দেওয়া হচ্ছে।

বিবিএস সূত্র বলছে, কালের পরিক্রমায় দেশের মানুষের পেশায় বৈচিত্র্য এলেও কৃষি এখনো বড় খাত। বর্তমানে কৃষিতে নিয়োজিত জনশক্তির সংখ্যা ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তবুও কৃষিতে শ্রমশক্তির সংখ্যা কমেনি।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী ৪৬ দশমিক ৬১ শতাংশ খানা (পরিবার) কৃষিনির্ভর। এ থেকে বোঝা যায় দেশের অর্থনীতিতে কৃষি বিরাট অবদান রাখছে। প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দেশে বর্তমানে নানা ধরনের ফসল উৎপাদিত হচ্ছে।

এরমধ্যে বিবিএস প্রধান ছয়টি ফসল হিসাব করে। এগুলো হলো আউশ, আমন, বোরো, আলু, গম ও পাট।

সূত্র জানায়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নচিত্র নিয়ে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে 'বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা' বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বই বের করেছে। বইটি সম্পাদনা করেছেন বিবিএসের যুগ্ম-পরিচালক (সেন্সাস উইং) রফিকুল ইসলাম।

রফিকুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশের উন্নয়ন দলিল তৈরি করা হয়েছে। দেশে কৃষিসহ নানা সাফল্য চিত্র ফুটে উঠেছে। চাল ও আলুর উৎপাদন অনেক বেড়েছে। আমরা বইটা ছাপাতে দিয়েছি। বইটা হাতে পেলেই সব সংসদ সদস্যদের হাতে কপি তুলে দেব। সবাই দেশের সব উন্নয়ন প্রসঙ্গে একটা সম্মুখ ধারণা পাবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95542 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1