শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবীণদের সুরক্ষায় প্রয়োজন নতুন আইন

২০৫০ সালে প্রবীণের সংখ্যা দঁাড়াবে ২ মিলিয়ন অধিকার ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার আহŸান প্রবীণ ফাউন্ডেশন বিল পাস করতে হবে ৬০-৭০ বয়সী প্রবীণদের কমের্র বাইরে রাখা যাবে না
যাযাদি রিপোটর্
  ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার আয়োজিত সেমিনারে বক্তৃতা করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। পাশে পল্লী কমর্ সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন Ñযাযাদি

দিন দিন প্রবীণদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বতর্মানে এই সংখ্যা দঁাড়িয়েছে ৭-৮ শতাংশ। যেভাবে মানুষের আয়ু বাড়ছে, এতে আগামী ৩২ বছর পর প্রতি পঁাচজনে একজন প্রবীণ হবেন। প্রবীণের সংখ্যা আগামী ২০৫০ সালে ২০-২২ শতাংশে পেঁৗছবে। সেই হিসাবে বাংলাদেশে প্রায় ২ মিলিয়ন প্রবীণ সংখ্যা দঁাড়াবে। তাই এখন থেকে এই প্রবীণদের অধিকার ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার আহŸান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার আয়োজিত ‘প্রবীণ অধিকার সুরক্ষায় করণীয় : আন্তঃপ্রজন্ম সমন্বয়’ শীষর্ক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেছেন আমন্ত্রিত বিশ্লেষকরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পল্লী কমর্ সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, সংবিধানে আছে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। ফলে এখন এই অধিকার নিশ্চিত করতে শক্তভাবে দাবি তুলে তা বাস্তবায়ন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার রয়েছে বলেই এখন প্রবীণরা ভাতা পাচ্ছেন, নীতি প্রণয়ন হয়েছে। তবে এখনো প্রবীণদের অধিকার নিশ্চিতে বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। শতভাগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় কারণ হিসেবে তিনি বিচারহীনতাকে দায়ী করেন।

তিনি আরও বলেন, পিতা-মাতা ভরণ-পোষণ আইন ও প্রবীণ নীতি হয়েছে, এখন প্রবীণদের সুরক্ষায় নতুন একটি আইন হওয়া প্রয়োজন। এর দাবি তুলতে হবে। প্রবীণদের সঙ্গে একজন সঙ্গী থাকতে হবে, কারণ প্রবীণ হলে সবাই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। ফলে আন্তঃপ্রজন্ম সেতু বন্ধনের মাধ্যমেই এই নিঃসঙ্গতা দূর করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, প্রবীণদের জন্য কী করণীয়; বিশ্ব এর জন্য প্রস্তুতি নিলেও বাংলাদেশে যে ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে, তা পযার্প্ত নয়। আগামী ৩২ বছর পর বাংলাদেশে প্রবীণদের সংখ্যা ২০-২২ শতাংশে পেঁৗছে ২ মিলিয়নে দঁাড়াবে। তাই এখন থেকে তাদের নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান জাতীয় প্রবীণ নীতিমালার আলোকে প্রবীণদের জন্য একটি আইন তৈরি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে আইন তৈরি করে শৃঙ্খল সমাজ তৈরি করার দাবি জানান তিনি।

হেল্প এইচ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর বারেয়া সুলতানা বলেন, সমাজের ৬০-৭০ বছরের প্রবীণদের কমর্ ক্ষমতা থাকলেও তাদের কমর্ অক্ষম মনে করা হয়। এ কারণে তাদের অলস সময় পার করতে হয়। প্রবীণবান্ধব দেশ গড়তে না পারায় তাদের বোঝা মনে করা হয়।

প্রবীণদের কল্যাণে তিনি কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রী, বাচ্চা ও গেস্টদের থাকার জন্য রুম বরাদ্দ থাকলেও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য কোনো আলাদা কক্ষ বরাদ্দ রাখা হয় না। তারা অন্যের রুম শেয়ার করেন। গেস্ট না থাকলে গেস্টরুমেই থাকতে দেয়া হয়। এর বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করা উচিত। এডুকেশন কারিকুলামে প্রবীণদের অধিকার নিয়ে আলাদাভাবে পাটর্ রাখার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আশা করছি, খুব দ্রæত এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ বিষয় হলো, প্রবীণ ফাউন্ডেশন বিল পাস করা। এই বিলটি যত দ্রæত পাস করা সম্ভব হবে, ততো দ্রæত প্রবীণদের অধিকার বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। বিল পাস হলেই যে সবকিছু সম্ভব হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়, বিল পাস হলে কাযর্ক্রম এগিয়ে নেয়া কিছুটা হলেও মসৃণ হবে।

৬০-৭০ বয়সের প্রবীণদের কমের্র বাইরে রাখা যাবে না, প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবা চালু করতে হবে, গ্রামের পাশাপাশি শহরের প্রবীণদের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রবীণবান্ধব সমাজ গড়ার প্রস্তাব পেশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউএনএফপিএ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর আসা বিত্তা টরকেলসন, ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখাজীর্, মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাস, প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরাবিজ্ঞানের মহাসচিব অধ্যাপক আতীকুর রহমান প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18028 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1