শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৯৫ শতাংশ চাষিই সংক্রমিত বীজ আলু ব্যবহার করেন

যাযাদি রিপোটর্
  ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

দেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য আলু। বছরে জনপ্রতি আলু কেনা হয় ১০৩ কেজি। বিগত ১২ বছরে আলুর উৎপাদন এবং রফতানি পযর্ন্ত বাড়লেও এ শস্যের মান ও ফলন নিয়ে কথা থেকেই যাচ্ছে। আলুর ভালো ফলন না হওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা দুষছেন সংক্রমিত বীজ ব্যবহারকে। তাদের মতে, চাষিদের ৯৫ শতাংশই ব্যবহার করেন সংক্রমিত বীজ আলু, যার ফলে এই শস্যের মান এবং ফলন আশাব্যঞ্জক হচ্ছে না।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কপোের্রশন (বিএডিসি) ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আলুর ফলনের ক্ষেত্রে মাত্র ৪ শতাংশ কৃষকের হাতে এই বীজ সরবরাহ করছে সরকার। বেসরকারিখাত থেকে বীজ পান ১ শতাংশ কৃষক। এসব বীজের সঠিক সংরক্ষণ ও মান নিণের্য়র সুযোগ থাকে বলে ফলনও হয় বেশ। কিন্তু ৯৫ শতাংশ চাষিই নিজেদের মতো করে সংরক্ষিত বীজ ব্যবহার করেন, যেখানে মান নিণের্য়র সুযোগ নেই বলে থেকে যায় সংক্রমণ। যে কারণে হয় না ভালো ফলন।

বিএডিসির সংশ্লিষ্ট কমর্কতার্রা বলেন, বেশিরভাগ কৃষকেরই নিম্নমানের বীজ ব্যবহারের কারণে আলুর কাঙ্ক্ষিত ফলন হচ্ছে না। ২০১৩-১৪ অথর্বছর থেকে বাংলাদেশে প্রতি হেক্টরে ১৯-২০ টন আলু উৎপাদন হয়। কিন্তু একই পরিমাণ জমিতে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৪০-৪২ টন আলু উৎপাদন করে থাকে। এসব দেশে সরকারি উদ্যোগে মানসম্মত বীজ কৃষক পযাের্য় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ চাষিই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বীজ রাখছেন এবং রোপণ করছেন, সেজন্য আলুর ফলনও কম।

অন্য দেশের সঙ্গে তুলনায় না গেলে অবশ্য বাংলাদেশে আলুর ফলন ক্রমেই বাড়ছে। ২০০৭-২০০৮ অথর্বছরে যেখানে আলু উৎপাদন হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৭ লাখ টন। ১০ বছর পরে এসে এ শস্য উৎপাদন ছাড়িয়েছে ১০০ লাখ টন। এরমধ্যে আবার বছরে দুই থেকে আড়াই হাজার টন আলু রফতানিও করা হয়।

বিএডিসির সূত্র মতে, বতর্মানে সারাদেশে প্রতি হেক্টরে দেড় টন হিসেবে মোট সাড়ে ৭ লাখ টন আলু বীজের প্রয়োজন। সরকারের আওতায় রয়েছে ৩০টি আলু বীজ হিমাগার। যেগুলোর মোট ধারণ ক্ষমতা ৪৫ হাজার ৫০০ টন। আলু বীজ সংরক্ষণে তাই সরকার আরও বেশি হিমাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।

এ বিষয়ে আলাপ করলে বিএডিসি চেয়ারম্যান ফজলে ওয়াহেদ খোন্দকার বলেন, ‘আমরা মাত্র ৪ শতাংশ কৃষকের হাতে আলু বীজ তুলে দিয়ে থাকি। বাকি ১ শতাংশ কৃষক বেসরকারি উদ্যোগে চাহিদা মেটান। আমাদের সরবরাহ করা আলু বীজে উৎপাদন ভালো। কারণ আমরা সব ধরনের প্রক্রিয়া মেনেই আলু বীজ সরবরাহ করি। কিন্তু ৯৫ শতাংশ কৃষক নিজ উদ্যোগে আলু বীজ সংগ্রহ করেন বলে এসব বীজের মান ভালো থাকে না।

ফলে এসব বীজ থেকে ভালো আলুও হয় না।’

কৃষক পযাের্য় বেশি হারে আলু বীজ সরবরাহ করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যতো আলু বীজ সরবরাহ করবো, ততো ভালো উৎপাদন হবে। এ লক্ষ্যে আমরা ছয়টি নতুন হিমাগার নিমার্ণ করবো। যার ফলে বিএডিসির হিমাগারে বীজ আলুর সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়বে।’

বিএডিসির বিশেষজ্ঞরা জানান, আলু বীজ হলো কৃষির মৌলিক উপকরণ এবং ফসল চাষের একমাত্র জীবিত উপকরণ। অন্যান্য উপাদানের কাযর্কারিতা বীজের ওপর নিভর্র করে। ভালো মানের বীজ একাই উৎপাদনের ২০ শতাংশ বাড়াতে পারে। সেজন্য বলা যায়, আলুর উৎপাদন বাড়াতে বীজের গুরুত্ব অনেক। আর তাই কৃষকের হাতে উন্নত মানের আলু বীজ পৌঁছালে এ শস্য ফলনে আরও সফলতা আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18200 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1