শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চা শিল্পে দাসপ্রথার রেশ এখনো আছে: টিআইবি

যাযাদি রিপোটর্
  ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
সিলেটের একটি চা বাগান Ñফাইল ছবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নিবার্হী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এর রেশ কাটেনি। দেশের চা শিল্পে এখনো এর রেশ রয়ে গেছে। চা- শ্রমিকদের সরাসরি দাস বলা যাচ্ছে না। কিন্তু তাদের যে মৌলিক অধিকার তা থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার, শিল্প মালিক, চা সংসদ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর দায় রয়েছে।

মঙ্গলবার ‘চা বাগানের কমর্-পরিবেশ ও শ্রমিকদের অধিকার : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীষর্ক টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ধানমন্ডি মাইডাস ভবনে টিআইবির প্রধান কাযার্লয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ব্রিটিশ আমলে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের নিয়ে এসে চা-বাগানের কাজে লাগানো হয়েছিল। সেই থেকে ঐতিহ্যগতভাবে তারা বংশানুক্রমে ওই চা-বাগানে রয়েছেন। এই শিল্পটাই তারা করেন। অনেক অব্যবস্থাপনা সত্তে¡ও তারা সেখানে আছেন। কারণ এর বাইরে যাবার সুযোগ তাদের খুবই কম। তা সত্তে¡ও এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, যারা এই অঞ্চলে চা-শ্রমিক পরিবারের সদস্য, তাদের কেউ কেউ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন। তবে গ্রাজুয়েট আছেন হাতেগোনা মাত্র কয়েক জন। মূলত তারা ঐহিত্যগত চা-শ্রমিক।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখার বলেন, বাধ্য করে আটকে রেখে কাউকে চা বাগানে শ্রমিকের কাজ করানো হয় না। আসলে তাদের যাবার কোনো জায়গা নেই।

তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের আমি প্রথাগত দাস বলব না, বলাও যাবে না। তার কারণ হচ্ছে দাস প্রথার মধ্যে মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো সম্পূণর্ অনুপস্থিত। আমাদের এখানে চা-শ্রমিকরা অনেক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলেও একেবারেই বঞ্চিত বলা যাবে না। তবে এখানে দাস প্রথা যেহেতু অরিজিনেট হয়েছে তাই দাস প্রথার কথাটি আসছে। সেটার একটা রেশ এখনো রয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আগের তুলনায় চা-বাগানে শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি ঘটলেও এখনো অন্য সব শ্রম সেক্টরের তুলনায় তারা অনেক পিছিয়ে। তাদের মজুরি কাঠামো, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও নাজুক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, টিআইবির উপদেষ্টা (নিবার্হী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (গবেষণা ও পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, গবেষণা তত্ত¡াবধান ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. ওয়াহিদ আলম।

গবেষণা পরিকল্পনা ও প্রতিবেদন প্রকাশ করেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার দিপু রায়, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা ও রবিউল ইসলাম।

গবেষণার অধীনে শুধুমাত্র প্রথাগত শ্রমিকদেরই অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে। যারা চা-বাগানে স্থায়ীভাবে কতৃর্পক্ষের দেয়া বাসস্থানে বসবাস করেন। যাদের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় সব সুযোগ-সুবিধা ও মজুরি বাগান কতৃর্ক দেয়া হয় এবং যারা মূলত সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলায় বসবাস করেন।

গবেষণার সময়কাল ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট। গবেষণার ক্ষেত্রে আইনি সীমাবদ্ধতা, বৈষম্যমূলক আইন ও নীতিমালা, চাকরি স্থায়ীকরণ, মজুরি কাঠামো, চা পাতার ওজন করণ, কাজের পরিবেশ, ছুটি ও উৎসব ভাতা, রেশন, আবাসন ও মেরামত, আবাসনে আলোর ব্যবস্থা, খাবার পানি সরবরাহ, চিকিৎসা, শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা, ভবিষ্যৎ তহবিল, ক্ষতিপূরণ, প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদশর্ন অধিদপ্তরের দায়িত্বে অবহেলা ও দুনীির্তসহ সাবির্ক পযের্বক্ষণ গবেষণায় তুলে ধরা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<27758 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1