কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে ভাষার মাস ফেব্রæয়ারি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেক ভাষা সৈনিক বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষার মযার্দা প্রতিষ্ঠা করেন। ভাষা সৈনিকদের সম্মান জানাতে ১৯৯৯ সাল থেকে ২১ শে ফেব্রæয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তজাির্তক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ সরকারও সবর্স্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের রায় এবং বেশকিছু সরকারি আদেশ ও পরিপত্র দিয়ে বাংলা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পঁাচ যুগের অধিক সময় পার হয়ে গেলেও এখনো সবর্ত্র বাংলা ভাষার ব্যবহারের জন্য অভিযান করতে হয়, জেল জরিমানা করতে হয়।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরও যেন এই ফেব্রæয়ারিকে ঘিরে সরব হয়ে ওঠে। অথচ বছরের বাকি ১১ মাস সবর্ত্র বাংলা ভাষার ব্যবহারে থাকে না বিশেষ কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ফেব্রæয়ারি মাস এলেই এমন উদ্যোগ কি বাস্তবতার নিরিখে নাকি লোক দেখানো!
গত বছরও ফেব্রæয়ারির আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সবর্ত্র বাংলা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে বিশেষ অভিযান কমর্সূচি হাতে নেয়। এরপর কিছুদিন অভিযান করে কয়েকটি দোকান ও শপিং মলে জরিমানাও করে। তবে একুশে ফেব্রæয়ারির পরে যথারীতি পাল্টে যায় এসব চিত্র।
সিটি করপোরেশনের এমন উদ্যোগের বিষয়ে মহাখালীর বাসিন্দা মাসুম আলী বলেন, এই কয়েকদিন অভিযান করবে তারপর যা তাই। এসব আসলে লোক দেখানো। সিটি করপোরেশন যদি আন্তরিক হয় তাহলে প্রতি বছরই অভিযান করবে কেন? তাদের চোখের সামনেই তো সাইন বোডর্ বসানো হচ্ছে তাতে কি বঁাধা দিতে পারছে?
মোহাম্মদপুর কৃষি মাকেের্টর হান্নান স্টোরের মালিক আব্দুল হান্নান বলেন, গত বছরও একবার এরকম অভিযান করেছিল। আসলে কিছু জরিমানা করে আবার চলে যায়। আমার দোকানে বাংলা সাইনবোডর্ থাকলেও বড় বড় কোম্পানির সাইনবোডর্ ঠিকই ইংরেজি ভাষায় লেখা। তাতে কি কিছু করতে পারছে? আসলে ফেব্রæয়ারি মাস আসলেই তাদের মনে পড়ে অভিযান করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি বলেই ডিএনসিসি এলাকার অনেক দোকানেই ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষার সাইনবোডর্ দেখা যায়। এটা চলমান কাজ।’
যারা সাইনবোডর্ ব্যানারে বাংলা ভাষা ব্যবহার করছেন না তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার আইনের ৯৩ ধারায় জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া হাইকোটের্র আদেশ ও সিটি করপোরেশনের নিদের্শনা না মানায় ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হচ্ছে।
সবর্ত্র বাংলার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর বনানী এলাকায় মোবাইল কোটর্ পরিচালিত হয়। নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে এ অভিযান চলে।