যাযাদি রিপোর্ট খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিএনপিকে সংসদে আনার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছেন, যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের সংসদে যাওয়া-না যাওয়ার সঙ্গে দন্ডিত কয়েদির মুক্তি বা জামিনের সম্পর্ক থাকতে পারে না। দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি সরকারই আটকে রেখেছে বলে দলটির অভিযোগ। তার আইনজীবীরা বলছেন, সরকার চাইলে তাকে প্যারোলেও মুক্তি দিতে পারে। এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপির ছয়জন সংসদ সদস্য এখনো শপথ নেননি। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদাকে মুক্তি দিলে তারা সংসদে যাবেন বলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর এসেছে, যদিও বিএনপি এই খবর নাকচ করেছে। শনিবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে হানিফকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। খালেদার মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমরা বার বার বলেছি, খালেদা জিয়া আদালতের দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। উনি কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কারাগারে নয়। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী একজন দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। এর বাহিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয় আরেকটি পন্থা আছে, সেটা হলো কোনো দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করলে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বা খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এখনঅবধি আবেদন করেছে কিনা, আমাদের জানা নেই।' সংসদে বিএনপির যাওয়ার বিষয়ে হানিফ বলেন, 'যারা জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের সংসদে যাওয়া-না যাওয়া দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তি বা জামিনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে না। নিশ্চয়ই কোনো ভোটার কাউকে মুক্তির জন্য কিংবা দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির জন্য তাকে (এমপি) ভোট দেয়নি। খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সংসদে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছেন, এটা একটা খুব বাজে সিদ্ধান্ত হিসেবে বাংলাদেশে থাকবে।' ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করার পর দল কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা, সেটা জানতে চাওয়া হয় হানিফের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, 'কেউ যদি অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হয়, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।' উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে দলের যারা কাজ করেছেন, তাদের বিষয়ে হানিফ বলেন, বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তারা। 'কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তখন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা পদক্ষেপ নিতে পারব।' সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ-বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ-বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা-বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও ইকবাল হোসেন অপু উপস্থিত ছিলেন।