শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
এবার ফলন কম

বাদামতলীর বাজারে ভরপুর জাত আম, তবে দাম বেশি

পোকার আক্রমণে নষ্ট হওয়ায় ফলন কম হয়েছে এবং ফলের চাহিদার তুলনায় জোগান কমায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা
নতুনধারা
  ০৮ জুন ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ০৮ জুন ২০১৯, ১২:০১

যাযাদি রিপোর্ট রাজধানীর বাজারগুলোতে একটু দেরিতে হলেও আসতে শুরু করেছে ভালো জাতের আম। ফলে দেশের সবচেয়ে বড় ফলের আড়ত বাদামতলী ও ওয়াইজঘাটে জমে উঠেছে পাইকারি বিকিকিনি। এবার সরকারের নির্ধারিত সময়সূচি ও ঈদের ছুটির কারণে বাজারে একটু দেরিতে আম এসেছে। বাজারে এখন জাত আম হিমসাগর, ন্যাংড়া, আম্রপালি। আছে ক্ষীরশাপাতি, গোপালভোগ ও লক্ষ্ণণভোগ আম। বাজার আমে ভরপুর থাকলেও দাম একটু বেশি। পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে প্রতি মণ আম ২ হাজার থেকে ২৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর ছিল ১২শ থেকে ২ হাজার টাকা। সে হিসেবে মান ও প্রকারভেদে আমের দাম মণে বেড়েছে ৭ থেকে ৮শ টাকা। পোকার আক্রমণে নষ্ট হওয়ায় ফলন কম হয়েছে এবং ফলের চাহিদার তুলনায় জোগান কমায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২০ মে থেকে রাজশাহীর বাজারে আম উঠতে শুরু করে। তবে ১ জুন থেকে ভালো জাতের আম নামানোর নির্দেশনা থাকায় এখন জমে উঠছে আমের বাজার। কিন্তু ৪ জুন থেকে ঈদের ছুটি থাকায় আম নামানো হয়নি। আজ (৭ জুন) থেকে আবার বাগানগুলোতে আম নামতে শুরু করেছে। ফলে আড়ত আমে ভরপুর। আগামী সপ্তাহ থেকে আমে ছেয়ে যাবে এই বাজার। শুক্রবার ঢাকার সবচেয়ে বড় আমের বাজার বাদামতলী ও ওয়াইজঘাট গিয়ে দেখা যায়, আড়তে আড়তে আমের পসরা সাজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। ক্রেতাদের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে ঘুরে আম কিনতে দেখা গেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাভার্ডভ্যান করে আসা আম নামাচ্ছে শ্রমিকরা। এই আম চলে যাচ্ছে বিভিন্ন আড়তে। বাজারে হিমসাগর, আম্রপালি, ক্ষীরশাপাতি, ন্যাংড়া, গোপালভোগ ও লক্ষ্ণণভোগ আম মান ও প্রকারভেদে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২২শ থেকে ২৮শ টাকায়। বাদামতলীর আম ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এখন ধীরে ধীরে বাজারে আম আসতে শুরু করেছে। ফলে ধীরে ধীরে জমে উঠবে আমের বাজার। আগামী সপ্তাহ থেকে আমে ভরে যাবে পুরো বাদামতলী। ঈদের পরের বাজারতো, তাই ক্রেতা কম। লোকজন আসা শুরু হলে আমাদের বিক্রিও বাড়বে। ' আরেক ব্যবসায়ী আলী হোসেন জানান, 'বাজারে আম আসতে শুরু করায় নগরীতে সিজনাল আম ব্যবসায়ী বেড়েছে। এখন থেকে আমের বাজার জমে উঠবে। বিক্রিও হচ্ছে মোটামুটি। ক্রেতাদের চাহিদামতো আম দিতে পারায় ব্যবসা ভালো হবে আশা করছি। দামের বিষয়ে তিনি জানান, হাটের চেয়ে নগরীতে দাম তো একটু বেশি হবেই।' রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫টি বাগানের মালিক হাবিল আলী বলেন, এবার আমের ফলন কম। পোকার কারণে আম নষ্ট হয়ে গেছে। যে গাছে আগে আম হতো ২০ মণ- এ বছর হয়েছে ৫/৭ মণ। সঠিক সময়ে ওষুধ দিতে না পারায় এমন হয়েছে। স্থানীয় বাজারগুলোতে ওষুধ বিক্রি হয়েছে কম। তাই চাহিদার তুলনায় ওষুধ কম থাকায় দাম বেশি ছিল। ফলে অনেক বাগানের মালিক সময়মতো ওষুধ দিতে পারেনি। মূলত এজন্য ফলন কমেছে। তিনি বলেন, 'সরকারের নির্দেশনা অনুয়ায়ী জুনের প্রথম থেকে বাগান থেকে আম নামানো হয়েছে। আমরা বাগান থেকে আম নামিয়ে সরাসরি বাদামতলী নিয়ে আসি। এখানে আড়তদারদের ১০ শতাংশ খরচ দিতে হয়। সবমিলিয়ে বাগান খরচ, শ্রমিক খরচ, ওষুধ, ঢাকা পর্যন্ত আনা ও আড়তদারি দিয়ে আমাদের একরপ্রতি কেজি আমের উৎপাদন খরচ পড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আর আমরা বিক্রি করছি প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। দাম ভালো হলেও ফলন ভালো না হওয়ায় লাভ হবে না। ' খুচরা আম বিক্রেতা আল আমিন বলেন, 'পাইকারি বাজার থেকে কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করি। এবার আমের ফলন কম হওয়ায় দাম বেশি। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। আমরা সাধারণত বাদামতলী ও ওয়াইজঘাট থেকে আম কিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। ' বাদমতলীতে আম কিনতে এসেছেন চাকরিজীবী শ্যামল সরকার। তিনি বলেন, 'বাসার জন্য আম নেব। একটু কম দামে পাব বলে পাইকারি বাজারে এসেছি। মহলস্নার খুচরা বাজারে আমের দাম শুনে তো ভালো লাগল না। বাসা কাছে তাই বাদামতলী এসেছি। এক মণ আম কিনে কয়েকজন ভাগ করে নেব। কিন্তু এসে দেখি আমের দাম চড়া। এখানে হিমসাগর ও আম্রপালি প্রতি মণ ২৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর আম নিয়েছিলাম ২ হাজার টাকা মণ।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে