শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

পরিত্যক্ত ভবনে কর্মচারীদের বসবাস

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটি খালি করতে সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছে। আবাসিক সুবিধা না থাকায় স্বল্প আয়ের এ কর্মচারীরা ভবনটি ত্যাগ করছেন না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভবনটিতে বাস করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা।
মহিউদ্দিন রিফাত
  ২০ জুন ২০১৯, ০০:০০

পুরান ঢাকার ১ নম্বর ঈশ্বরচন্দ্র দাস লেনের ৩৫ ও ৩৬ প্যারিদাস রোডের মাথায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিত্যক্ত বাণী ভবনে বসবাস করছেন কর্মচারীরা। পুরনো ভবনটিকে বেশ কিছুদিন আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটি খালি করতে সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছে। আবাসিক সুবিধা না থাকায় স্বল্প আয়ের এ কর্মচারীরা ভবনটি ত্যাগ করছেন না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভবনটিতে বাস করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। সেখানে দুর্ঘটনা ঘটলে সেই দায়ও আক্রান্ত ব্যক্তিদেরই নিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাণী ভবন এক সময় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদের আবাসিক হল হিসেবে ব্যবহূত হতো। ১৯৮৫ সালে এরশাদ সরকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার পর স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। তারপর ছাত্ররা ভবনটি ছেড়ে চলে যায়। পরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা ভবনটিতে বাস করা শুরু করে। তবে কালের পরিক্রমায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি তা বসবাসের অযোগ্য হিসেবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে রাজউক। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও কর্মচারীদের ভবনটি ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তারপরও কর্মচারীরা সেখানে বাস করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাণী ভবনের ফটকে লেখা রয়েছে 'কর্মচারী আবাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা'। পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকে ভবনটিতে বিদু্যৎ ও গ্যাস সংযোগ নেই। এ অবস্থায়তেই ভবনের ২১টি রুমে বাস করছেন অর্ধশতাধিক কর্মচারী। তাদের মধ্যে অনেকে পরিবার নিয়ে বাস করেন সেখানে। বিদু্যৎ সংযোগ না থাকায় সৌরবিদু্যতের মাধ্যমে ঘরে আলো জ্বালান তারা। রান্নায় ব্যবহার করেন সিলিন্ডার গ্যাস। ভবনটির বাইরে ও ভেতরের অবস্থায় অনেকটা জরাজীর্ণ। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ভবনে বসবাসকারী জবির কর্মচারী আল আমিন বলেন, 'বাণী ভবনে বাস করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ জানি কিন্তু আমরা খুব অল্প বেতনে কাজ করি। আলাদা বাসা ভাড়া দিতে গেলে সংসার চলবে না। তাই গ্যাস-বিদ্যুৎ না থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে থাকছি। এখানে থাকতে অনেক কষ্ট হয়।'

রিয়াজুল ইসলাম নামে আরেক কর্মচারী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। নোংরা পরিবেশ। তারপরও কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছি। সত্যি বলতে এটা কোনো জীবনই না। কর্তৃপক্ষকে আবাসন সমস্যার কথা বলা হয়েছে। তারা এ সমস্যার সমাধান করবে বললেও এক বছর পার হয়ে গেছে।'

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো আবাসন ব্যবস্থা নেই। কর্মচারীদের জন্যও আবাসন ব্যবস্থা নেই। বাণী ভবনটি পরিত্যক্ত। কেউ না থাকার সুযোগে হয়তো কর্মচারীরা সেখানে আবাস গড়েছে। তবে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখান থেকে কর্মচারীদের চলে যেতে বলা হয়েছে। গত মে মাসেও নোটিশ দিয়ে ভবনটি খালি করতে বলা হয়েছে। এরপরও সেখান থেকে কেউ না গেলে ক্ষতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

এদিকে পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও ঝুঁকিপূর্ণ বাণী ভবনে বসবাসের বিষয়ে জানে না রাজউক। সংস্থাটির উন্নয়ন কর্মকর্তা মেজর সামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাণী ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে লোকজনের বসবাসের বিষয়টি তাদের জানা নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54378 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1