ঈদের পর একে একে চার দিন কেটে গেলেও নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা বেশিরভাগ মানুষ এখনো ঢাকায় ফিরে আসেনি। ফলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীর সবজির বাজারগুলোতেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। তবে ক্রেতা কম থাকলেও চড়া দামে বিক্রি হয়েছে বেশিরভাগ সবজি। কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা জানায়, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ঈদের আগেই বেশকিছু সবজির দাম বেড়ে যায়। ঈদের পর সবজির সরবরাহ কম থাকায় নতুন করে কিছু সবজির দাম বেড়েছে। তবে কয়েকটি সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদ করতে যারা গ্রামের বাড়ি গেছেন তাদের বেশিরভাগ এখনো ঢাকায় ফিরে আসেননি। যে কারণে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম। ফলে বিক্রি হচ্ছে কম। আগামী সপ্তাহ থেকে বিক্রি বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে কিছু সবজির দাম বাড়তে পারে। কারণ কয়েকদিন ধরেই টানা বৃষ্টিতে সবজি খেতের ক্ষতি হয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগের মতো এখনো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। বাজার ভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা শিম। বাজার ভেদে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কেজি ১০০ টাকা ছোঁয়ার তালিকায় আছে বরবটিও। বাজার ভেদে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। ঈদের আগে বরবটির কেজি ছিল ৬০ টাকা। সবজির চড়া দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, 'কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে তুলনায় সবজির দাম খুব একটা বাড়েনি। কারণ গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়া বেশির ভাগ মানুষ এখনো ফিরে আসেনি। আমাদের ধারণা ক্রেতা বাড়লে সব ধরনের সবজির দাম আরও বেড়ে যাবে।' এদিকে ঈদের আগের দামে বিক্রি হওয়া সবজির মধ্যে করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স, উসি ও ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। কাঁকরোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। পটোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস। ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। কচুর মুখি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। বাজার ঘুরে আরও দেখা যায়, ঈদের আগের মতোই বাজার ও মান ভেদে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। আর দেশি পেঁয়াজের কেজি আগের মতো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। এদিকে মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল লেয়ার মুরগি। গরুর মাংস বাজার ভেদে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি। এ ছাড়া প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ঈদের আগের মতো ১০৫-১১০ টাকায়। মালিবাগ হাজীপাড়া থেকে বাজার করা ফাতেমা বেগম বলেন, 'কয়েকদিন ধরে শুধু মাংস খাচ্ছি তাই বাজার থেকে কিছু সবজি কিনতে গিয়েছি। কিন্তু টমেটো, গাজর, শসা, শিমের যে দাম তাতে মিষ্টিকুমড়া, উসি, ঢেঁড়স কিনেই বাসায় ফিরছি।'